ফেসবুকে বন্ধুত্বের আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ, ভারত-পাকিস্তানেও চক্রের সদস্য
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ‘নিশানা’ বানিয়ে ফেসবুকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠান। অনুরোধ গ্রহণ করার পর বন্ধুত্ব থেকে গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এরপর শুরু হয় মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে নিয়মিত কথা বলা। ভিডিও কলে কথোপকথনের একপর্যায়ে গোপনে ওই ব্যক্তির আপত্তিকর ছবি মুঠোফোনে ধারণ করেন একটি চক্রের সদস্যরা। পরে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে লাখ টাকা দাবি করেন তাঁরা।
এমন একটি প্রতারণার ঘটনায় গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলা তদন্তে নেমে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ চক্রের দুই সদস্যের সন্ধান পায়। গত বুধবার ঢাকার কড়াইল ও বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. টিপু সুলতান (২৭) ও মো. মোসলেম রানা (২৮)। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে ডিবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীপিকা আগারওয়ালা নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠানো হয়। চক্রের নারী সদস্য দিয়ে কথোপকথনের ভিডিও রেকর্ড করে মুঠোফোনের স্কিন শেয়ারের মাধ্যমে ভিডিও কলে কথা বলানো হয়। কথোপকথনের একপর্যায়ে গোপনে ওই ব্যক্তির ভিডিও ধারণ করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, এটি একটি আন্তঃদেশীয় প্রতারক চক্র। ভারত ও পাকিস্তানেও এদের সদস্য রয়েছে। এই চক্রের হোতা শাকিল নামের এক ব্যক্তি। তিনি ভারতের নাগরিক। চক্রের পাকিস্তানি একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁর নাম পারভেজ।
ডিবি সূত্র জানায়, মানুষকে ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া টাকার অর্ধেক পান শাকিল। বাকি টাকা পান বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি প্রতিনিধিরা। টিপু ও মোসলেম বাংলাদেশে শাকিলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের পরিচয় হয়। পরে প্রতারক চক্রের সদস্য হন।
গ্রেপ্তার টিপু ঢাকার হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের তৃতীয় বর্ষ এবং মোসলেম তিতুমীর কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে ডিবি।