পার্কে বেড়াতে নিয়ে কিশোরীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ছুরিকাঘাত
প্রতীকী ছবি

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় কিশোরী সানজিদা খানম ওরফে ইভাকে (১৬) ছুরিকাঘাতে তিন তরুণ হত্যা করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে সানজিদাকে নিয়ে তিন তরুণ পার্কে বেড়াতে যান। পার্ক থেকে ফেরার পথে তিন তরুণ সানজিদাকে হত্যা করে পালিয়ে যান। সানজিদা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নাহিদুল ইসলাম ওরফে সায়েম (১৯) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রংপুরের পীরগাছা আমলী আদালতে জবানবন্দি দেন নাহিদুল। এ সময় তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। নাহিদুল নিজেকে সানজিদার প্রেমিক বলে দাবি করেন। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্য দুই তরুণের সঙ্গেও সানজিদার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে নাহিদুল দাবি করেছেন।

আরও পড়ুন

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার হরিচরণ এলাকায় সড়কের পাশ থেকে সানজিদার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সানজিদার উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের গোড়াই এলাকার সৌদি আরবপ্রবাসী ইব্রাহিম খানের মেয়ে। সানজিদা বড়দরগা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এ ঘটনায় গতকাল সানজিদার বাবা ইব্রাহিম খান বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় নাহিদুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নাহিদুল মাহিগঞ্জ থানার তালুক উপাশু গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য নিহত সানজিদার ব্যাগে পাওয়া একটি খাতা ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নাহিদুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর নাহিদুলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নাহিদুল বলেন, তিন বছর আগে সানজিদার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গেলেও তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি সানজিদাকে নিয়ে রংপুরের শাপলা সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যান। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেম নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সানজিদা সেখান থেকে চলে যায়।

পরে তিনি অন্য দুই তরুণের সাহায্যে কৌশলে সানজিদাকে নিয়ে শহরের মাহিগঞ্জে মিলিত হন। এরপর তাঁরা একসঙ্গে পাঁচজন পীরগাছা উপজেলার আলীবাবা থিম পার্কে বেড়াতে যান। সন্ধ্যায় সেখান থেকে ফেরার সময় মধুপুর সড়কের একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে ওই তিন তরুণ সানজিদাকে ছুরিকাঘাত করে সেখান থেকে সটকে পড়েন।

রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, গ্রেপ্তার নাহিদুল হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।