কিশোরকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, পুলিশ কনস্টেবল সাময়িক বরখাস্ত

কিশোরকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কনস্টেবল মো. শওকত আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

চট্টগ্রাম শহরে একটি দোকানে ঢুকে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরকে বেধড়ক মারধর করেছেন একজন পুলিশ সদস্য। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি কনস্টেবল মো. শওকত আলী। নগর পুলিশের যানবাহন শাখায় কর্মরত ছিলেন। আজ রোববার বিকেলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জানা গেছে, নগরের টাইগার পাস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশের একটি দোকানে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করে কিশোরটি। পাশের একটি কলোনিতে পরিবারের সঙ্গে থাকে সে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ মোহাম্মদ তামান্না নামের একজন ফটোসাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে টাইগার পাস এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তখন পাশের একটি চায়ের দোকানের ভেতর থেকে কিশোরের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। সে বারবার বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছিল। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একজন পুলিশ সদস্য তাকে বেধড়ক মারধর করছেন। এক হাতে শিশুটিকে মারছেন, আরেক হাতে সিগারেট। মারধরের ফাঁকে ফাঁকে ধূমপান করছিলেন ওই পুলিশ সদস্য।

সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ তামান্না আরও বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আরও কয়েকজন জানিয়েছেন কিশোরকে প্রায় ২০ মিনিট ধরে মারধর করা হচ্ছিল। তখন কেন মারধর করা হচ্ছে জানতে চাইলে শওকত আলী তাঁকে বলেন, কিশোরটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে তাঁর লাইটার চুরি করেছে।

পরে কিশোরকে মারধরের ওই ঘটনার ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। নগর পুলিশের উপকমিশনার (যানবাহন) হোসেইন মোহাম্মদ কবির ভুঁইয়ার সই করা চিঠিতে বিকেলে কনস্টেবল শওকত আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘কনস্টেবল শওকত আলী পুলিশের ইউনিফরম পরিধান করে ধূমপানরত অবস্থায় একটি দোকানের মধ্যে একজন অজ্ঞাতপরিচয় শিশুর সঙ্গে অশোভন আচরণ করার দৃশ্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এই কনস্টেবল বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য হওয়া সত্ত্বেও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি জনসম্মুখে ক্ষুণ্ন করেছেন। এ অবস্থায় কনস্টেবল শওকত আলীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো’।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) স্পিনা রাণী প্রামাণিক। তিনি বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিভাগীয় মামলাসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।