আলেশা মার্টের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে টাকা ফেরত চান গ্রাহকেরা

আলেশা মার্ট পাওনাদার গ্রাহকবৃন্দের ব্যানারে আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ছবি: প্রথম আলো

প্রবাসী বাবার কাছ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে আলেশা মার্টে দুটি মোটরসাইকেল ফরমাশ (অর্ডার) দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন। গত বছরের জুন মাসে অগ্রিম টাকা পরিশোধ শেষ করেন। ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত পণ্য ও টাকা কোনোটিই ফেরত পাননি।

নাজমুলের মতো বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহক আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁরা বলেন, ১৮ মাস চলে গেলেও পণ্য ও টাকা কোনোটাই ফেরত পাচ্ছেন না। তাই ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার, পরিচালক সাদিয়া চৌধুরী ও জান্নাতুল নাহারকে গ্রেপ্তার ও প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আলেশা মার্ট পাওনাদার গ্রাহকবৃন্দের ব্যানারে গ্রাহকদের অভিযোগ, ভুক্তভোগী গ্রাহকদের করা প্রায় ২০০ মামলায় আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদ্বয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। কিন্তু পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার করছে না।

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পক্ষে পাঁচ দফা দাবি তুলেন ধরেন সান্তনু দাস। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রতারণার দায়ে অনেক প্রভাবশালী বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু আমরা জানি না তাঁর ক্ষমতার জোর কোথায়। মঞ্জুর আলম গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে ই–কমার্স ব্যবসার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। জনগণের কাছে ই–কমার্সকে একটি সন্দেহজনক ব্যবসা হিসেবে পরিণত করেছেন। তাই তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা না গেলে আরও অনেকে মানুষের সঙ্গে এমন প্রতারণা করার সাহস পাবে।’

গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাঁরা যেন বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেই দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। গ্রাহকেরা বলেন, এতগুলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি থাকার পরও যদি তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যান, তাহলে গ্রাহকদের সব দায়দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোম্পানি থেকে আমাকে একটি ভুয়া চেক দেওয়া হয়েছিল। পরে মামলা করেছি। আমার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। বনানী থানায় একাধিকবার গিয়েছি। তবে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করছে না।’ তবে এ বিষয়ে জানতে বনানীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ভুক্তভোগী এই গ্রাহক আরও বলেন, মাঝেমধ্যেই মঞ্জুর আলম ফেসবুক লাইভে এসে টাকা পরিশোধের কথা বলেন। আবার গ্রাহকদের হুমকি–ধমকিও দেন। লাইভে এসে তিনি গ্রাহকদের বোঝান যে তিনি অনেক প্রভাবশালী। তাঁকে কেউ গ্রেপ্তার করতে পারবে না।

গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে কল করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।