ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও: বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলার অভিযোগে তরুণী গ্রেপ্তার

প্রতারণা
প্রতীকী ছবি

ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ, ছবি তুলে তা স্বজনদের কাছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, ছয়জন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

২৪ বছর বয়সী ওই তরুণী ঢাকার বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনের স্নাতকের শিক্ষার্থী। তাঁর কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন এবং তাতে সংরক্ষিত বেশ কয়েকটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে বলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বুধবার জানিয়েছেন।

ওই তরুণীর বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে আইনে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, তাঁর ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার ছয়জন ব্যক্তি সম্প্রতি মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন। তাঁদের মধ্যে একজন ওই তরুণীর বান্ধবী। তিনি ওই বান্ধবীর সঙ্গে তাঁর প্রেমিকের বিভিন্ন অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিজের কাছে রেখে দেন। সম্প্রতি মেয়েটির বিয়ে হয়। এরপর ওই তরুণী তাঁর কাছে থাকা ওই সব ছবি ও ভিডিও মেয়েটির স্বামীকে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা চান। এ অবস্থায় মেয়েটির সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন তিনি সিআইডি কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন এবং পরে পল্টন থানায় মামলা করেন।

সিআইডির পুলিশ সুপার রেজাউল বলেন, ওই তরুণী আরেক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন। পরে ওই ভিডিও তাঁর স্বজনদের এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা আদায় করেন। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আরও টাকা আদায়ে তাঁকে ভয় দেখাচ্ছিলেন তিনি।

বুধবার সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই তরুণী ভুয়া পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন। তিনি সেখানে নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতেন। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং অনলাইনে আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। নিশানা করা ব্যক্তিকে তিনি প্রেমের ফাঁদে ফেলে অল্প সময়ের মধ্যে শিকারে পরিণত করতেন। ভিডিও কলে নিয়মিত সংযুক্ত রাখতেন। কৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিতেন। পরে ওই সব ছবি ও ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেল করতেন।

সিআইডির ভাষ্য, ওই তরুণী গত কয়েক বছরে এভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বহু টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোনে অনেক লোককে ব্ল্যাকমেল করার তথ্য পাওয়া গেছে। অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আলামতও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি প্রতারণাসহ অপকর্মের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

ওই তরুণী নেশায় আসক্ত জানিয়ে সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নেশার টাকা জোগাড় করতেই এই অনৈতিক পথ বেছে নেন বলে তিনি জানিয়েছেন।