‘মদ পান’ করে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত, বাধা দেওয়ায় ছাত্রলীগের মারধর

‘মদ পান’ করে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় বাধা দেওয়ার জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম অভিজিৎ দাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

মারধরের বিষয়ে অভিজিৎ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের রেলস্টেশন এলাকায় কয়েকজন মদ পান করে চিৎকার করছিলেন। এ সময় তাঁরা গালাগাল দিচ্ছিলেন এবং স্টেশন এলাকায় থাকা কয়েক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। ঘটনাটি নজরে এলে তাঁদের বাধা দেন তিনি। এতে তাঁরা ক্ষিপ্ত হন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কয়েক বন্ধু থাকায় সে সময় কিছু করার সাহস পাননি।

অভিজিৎ আরও দাশ বলেন, বুধবার তাঁর কথা মেনে চলে গেলেও শুক্রবার রাতে একা পেয়ে ১০ থেকে ১২ জন তাঁকে চলন্ত শাটল ট্রেনের মধ্যে মারধর করেন। রড দিয়ে তাঁর মাথা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন। এরপর তাঁরা ফতেয়াবাদ রেলস্টেশনে নেমে যান। পরে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর মাথা ও হাতে চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

প্রাক্তন ওই শিক্ষার্থী বলেন, তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পড়াশোনা শেষ করেছেন। দীর্ঘদিন এখানে থাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তিনি চেনেন। তাঁকে যাঁরা মারধর করেছেন, সবাই শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ারের (সিএফসি) কর্মী।

ছাত্রলীগের সিএফসি উপপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক। এ বিষয়ে জানতে তাঁকে একাধিকবার কল করা হলেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, মারধরের ব্যাপারে তিনি এখনো কিছু জানেন না। অভিযোগের সত্যতা পেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মারধরের বিষয়ে তিনি জেনেছেন। দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষে আছেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীরা। আরেকটি পক্ষে আছেন সাবেক সিটি মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা। ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এর মধ্যে বিজয় ও সিএফসি মহিবুলের, বাকি নয়টি উপপক্ষ নাছিরের অনুসারীদের।