ছাত্রাবস্থায় জাল টাকার বাহক, পড়াশোনা শেষে গড়ে তোলেন চক্র

উজ্জ্বল দাস
ছবি: সংগৃহীত

উজ্জ্বল দাস (৩৪) তখন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। এ সময় জাল টাকা তৈরিতে জড়িত একটি চক্রের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। চক্রের হয়ে জাল টাকা বহনের কাজ করতেন তিনি। পড়াশোনা শেষে পুরোদমে সেই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ জন্য একবার উজ্জ্বলকে কারাভোগও করতে হয়েছিল।

উজ্জ্বলের বাড়ি বাগেরহাট। ২০১৬ সালে জাল টাকাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান তিনি। জেলেই পরিচয় হয় রশিদ নামে জাল টাকার এক ‘কারবারি’র সঙ্গে। জামিনে বেরিয়ে রশিদকে নিয়ে নিজেই চক্র গড়ে তোলেন। এভাবে ১০ বছর ধরে জাল টাকার কারবার করছিলেন তিনি।

উজ্জ্বল দাসকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ। গত ১ জানুয়ারি রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিবি এসব তথ্য জানিয়েছে। গ্রেপ্তার চক্রের অন্য সদস্যরা হলেন আবদুর রশিদ (৫৫), মমিনুল ইসলাম (৪৬) ও মো. তুহিন আহমেদ (৪০)।

ডিবি জানায়, উজ্জ্বল ‘ইন্টেরিয়র ডিজাইনার’ পরিচয়ের আড়ালে জাল টাকার কারবার করতেন। তাঁর গড়া এ চক্রের সদস্যরা টাকা ছাড়াও ভারতীয় রুপি, ডলার ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প জাল করতেন। গ্রেপ্তার করার সময় তাঁদের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও প্রায় ২০০ কোটি জাল টাকা ও মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।

ডিবির তদন্ত–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আবদুর রশিদ নিজেকে পরিচয় দিতেন শেয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর এলাকায়। চক্রের আরেক সদস্য মমিনুল ইসলাম একটি প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবসায়ী। রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় হেরার জ্যোতি নামে তাঁর একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। এ ছাড়া জাল টাকা কারবার চক্রের সদস্য তুহিনের বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। তিনি জাল টাকা ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করতেন।