যাত্রী সেজে চালককে খুন করে অটোরিকশা বিক্রি করেন তাঁরা, গ্রেপ্তার ৬

নিহত অটোরিকশাচালক মোস্তফা
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর দক্ষিণখানে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মোস্তফা হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে তাঁকে হত্যা করা হয়।

ডিবি বলছে, তারা এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সংঘবদ্ধ পেশাদার খুনি ও ডাকাত চক্র শনাক্ত করেছে। চক্রটি একাধিক খুনের সঙ্গে জড়িত।

নিহত অটোরিকশাচালক জিহাদ
ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)  অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেছেন, সংঘবদ্ধ এই ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা যাত্রী সেজে অটোরিকশাচালককে নির্জন স্থানে নিয়ে খুন করেন। পরে তাঁরা অটোরিকশা বিক্রি করে দেন। চক্রটি মোস্তফা ছাড়া আরও একটি খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

গত ২৫ ডিসেম্বর পূর্বাচল এলাকায় জিহাদ নামে আরেক অটোরিকশাচালককে চক্রটি হত্যা করেছে বলে জানায় ডিবি।

গ্রেপ্তার ওই ছয়জন হলেন খালেদ খান (২০), মো. টিপু (৩১), মো. হাসানুল ইসলাম হাসান (২০), মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০), আবদুল মজিদ (২৯) ও মো. সুমন (৩৫)।

মোস্তফা স্ত্রী, দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে দক্ষিণখানে বসবাস করতেন। অন্যান্য দিনের মতো গত ৭ ডিসেম্বর নিজের অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হন। তবে রাতে বাসায় না ফেরায় মোস্তফার পরিবারের সদস্যরা সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন।
কোথাও সন্ধান না পেয়ে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মোস্তফার পরিবার দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ১২ ডিসেম্বর দক্ষিণখানে আশিয়ান সিটির নির্জন এলাকা থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হয়। পরে মরদেহটি মোস্তফার বলে শনাক্ত করে পরিবার।

অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় মোস্তফা খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে মৌলভীবাজার থেকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় খালেদ খানকে। পরে তাঁর দেখানো মতো মোস্তফার মুঠোফোনটি জব্দ করা হয়। পরে মোস্তফার খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত টিপু ও হাসানুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় জাহাঙ্গীর ও মজিদকে।

নিহত মোস্তফার উদ্ধার হওয়া অটোরিকশা। সেখানে মায়ের আহাজারি
ছবি: আসাদুজ্জামান

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রের ছয় সদস্যকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও একটি খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য স্বীকার করেছেন। যাত্রী সেজে নির্জন জায়গায় নিয়ে অটোরিকশাচালককে হত্যা করাই তাঁদের উদ্দেশ্য থাকে। পরে তাঁরা অটোরিকশা বিক্রি করে দেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে এই ছয় সদস্যকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই চক্র আরও কোনো খুনের ঘটনায় জড়িত আছে কি না, সেটি খুঁজে বের করা হবে।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে উপস্থিত মোস্তফার বৃদ্ধ বাবা গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা তাঁর ছেলেকে বিনা দোষে খুন করেছেন, তিনি  তাঁদের ফাঁসি চান।