এমবিবিএস পাস করেও তাঁরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত: র‍্যাব

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে র‍্যাব ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। তাঁদের মধ্যে দুজন চিকিৎসক, দুজন প্রকৌশলী ও একজন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। অন্যজন স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর (৫০), শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা (৪৯), সাদী মো. জূলকার নাইন (৩৫), কামরুল হাসান সাব্বির (৪০), মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬) ও সাঈদ মো. রিজভী (৩৫)।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী আনসার আল ইসলামের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধান। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, ছয়টি মুঠোফোন, ‘উগ্রবাদে সহায়ক’ পুস্তিকা এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম–সংক্রান্ত ডায়েরি ও নোটবই জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতার বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেন। সংগঠনের সদস্যদের তাঁরা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন। তাঁরা ভুল তথ্য দিয়ে আত্মীয়স্বজন, মাদ্রাসা ও সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপে যান। ২০১০ সালে স্থায়ীভাবে ইউরোপের একটি দেশে বসবাস শুরু করেন। আশিকুর রহমানের হাত ধরে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন তিনি। ২০২২ সালে সংগঠনটির নেতাদের নির্দেশে বাংলাদেশে এসে কার্যক্রম চালাতে থাকেন।

গ্রেপ্তার আশিকুর রহমান এমবিবিএস পাস করেছেন। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পাশাপাশি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবসা করতেন। তিনি ইউরোপের একটি দেশে থাকাকালে আনসার আল ইসলামের একজন স্থানীয় নেতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। আশিকুর সংগঠনটির ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম উপদেষ্টা ও অর্থ জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাদী মো. জূলকার নাইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ালেখার পর পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি ঢাকা অঞ্চলে বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন। আর কামরুল হাসান তথ্যপ্রযুক্তিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে একটি আইটি ফার্মে কর্মরত ছিলেন। তিনিও আশিকুর রহমানের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন।

গ্রেপ্তার সাঈদ মো. রিজভী পেশায় একজন চিকিৎসক। ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অবস্থানের সময় উগ্রবাদী মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরে ২০২২ সালে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। অন্যদিকে গ্রেপ্তার মাসুম রানা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। তিনির সাদী মো. জূলকার নাইনের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন।