রাজধানীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে সাতজন গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারপ্রতীকী ছবি

চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করার অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বিপ্লব খান (৩৩), ফারিন তানহা ওরফে তোফা (২৯), শম্পা আক্তার (২৪), শাহ মোহাম্মদ জোবায়ের ওরফে অভিক (২৩), আল-মাসুদ (৩২), মনিকা আক্তার (১৮) ও আবু সুফিয়ান (২৭)।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৩ আগস্ট থেকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শরীয়তপুরের মো. রহমান ও বান্দরবানের মনির উদ্দিন মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের এসপিসি থেরাপি সেন্টারে সেবা নিতে আসেন। সেখানে পাশাপাশি শয্যায় থাকায় তাঁদের মধ্যে পরিচয় ও পরে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে।

রহমান পেশায় গাড়িচালক। কক্সবাজারে একটি চীনা প্রকল্পে দোভাষী হিসেবে কাজ করেন মনির। চাকরি খুঁজছিলেন রহমান। গত ১৯ আগস্ট মনির তাঁকে ফেসবুকে একটি গাড়িচালকের চাকরির বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেন। রহমান সেই নম্বরে যোগাযোগ করেন। তাঁকে মিরপুরের বারেক মোল্লার মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা করতে বলা হয়।

সন্ধ্যার দিকে রহমান ও মনির মিরপুরের ৬০ ফুট বারেক মোল্লার এলাকায় পৌঁছালে একজন যুবক তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। চাকরির বিষয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে ওই তাঁদের একটি অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে শেওড়াপাড়ার একটি বাড়ির ষষ্ঠ তলায় নিয়ে যান।

পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেখানে রহমান ও মনিরকে একটি কক্ষে বসানো হয়। ওই যুবক তাঁর সঙ্গী ৯-১০ জন পুরুষ এবং ৬-৭ জন নারীকে ডেকে আনেন।

এরপর তাঁরা রহমান ও মনির উদ্দিনকে আটক করে মারধর করেন। তিনজন নারীকে তাঁদের পাশে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। প্রতারকেরা তাঁদের কাছ থেকে ১১ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা আনিয়ে নেন এবং রহমানের একটি মুঠোফোন ও মনিরের দুটি মুঠোফোন নিয়ে নেন। ঘটনাটি কোথাও প্রকাশ করলে ধারণ করা ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

পরে ঘটনাটি ডিবি মিরপুর বিভাগের নজরে আসে। ডিবির একাধিক দল অভিযানে নেমে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে মনিরের হাতিয়ে নেওয়া মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে তিনটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুক, ইমো এবং টেলিগ্রামের মাধ্যমে রিয়েল সার্ভিস ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা। ভুক্তভোগীরা আত্মসম্মানের ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ না করায় এ চক্রটি প্রতারণা অব্যাহত রেখেছিল।