অবৈধভাবে অর্জিত টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে শিক্ষকদের বিবাদ

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কথা বলে অবৈধভাবে আদায় করা টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে। গতকাল সোমবার উপজেলার থানা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজীবপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিটি বিষয়ে ২০০ টাকা নেওয়া হয়। এতে ওই কেন্দ্রের ২০০ পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় এক লাখ টাকা আদায় করেন প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর। টাকা নিয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রকাশ্যে নকলের সহযোগিতা করাসহ পূর্ণ নম্বরও দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা শেষে আদায় করা টাকা নিয়ে গত শনিবার পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্য শিক্ষকদের বাগ্বিতণ্ডা, এমনকি হাতাহাতিও হয়। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষকের লোকজন গতকাল বেলা ১১টায় থানা মোড়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান লিটন ও সহকারী শিক্ষক তাজুল ইসলামকে মারধর করেন।
আহত শিক্ষক নুরুজ্জামান অভিযোগ করেন, ‘ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকার ভাগ কাউকে না দিয়ে প্রধান শিক্ষক একাই আত্মসাৎ করেন। আমি অন্য শিক্ষকদেরও কিছু কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।’
তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জাল করে আমার বিষয়ের পরীক্ষা অন্যভাবে নিয়েছেন। তারপর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে গতকাল বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে ওত পেতে থাকা প্রধান শিক্ষকের ভাইয়েরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হঠাৎ আমাদের দুজনের ওপর হামলা করে।’
প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক পরীক্ষাকেন্দ্রেই আমার ওপর হাত তুলেছিলেন। এরপর পথে কী হয়েছে আমার জানা নেই।’ ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা তো সব পরীক্ষাকেন্দ্রেই ওঠানো হয়। আর আমি টাকা অদায় করিনি। সহকারী শিক্ষকেরাই ওই টাকা তুলেছেন।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুর রশীদ বলেন, এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে জবাবদিহি করতে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আমিও পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল লতিফ খান বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’