আজাদ-সাহেদের বিচার শুরু

মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও মো. সাহেদ
ফাইল ছবি

করোনার নমুনা পরীক্ষা, চিকিৎসা খরচ বাবদ সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান আজ রোববার এ অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ৪ জুলাই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হলো। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম।

বাকি পাঁচ আসামি হলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. শফিউর রহমান, গবেষণা কর্মকর্তা মো. দিদারুল ইসলাম ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলায় অভিযোগ গঠনের সময় ছয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান।

করোনার নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার খরচ বাবদ সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

মামলায় একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদকে অন্তর্ভুক্ত করে ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) সম্পাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনা মূল্যে পরীক্ষা করিয়েছেন। সেখান থেকে অবৈধ পারিতোষিক বাবদ রোগীপ্রতি সাড়ে ৩ হাজার টাকা হিসাবে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া আসামিরা রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও অন্যান্য কর্মকর্তার খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরেছেন।

দুদকের মামলায় ছয় বছর ধরে নবায়ন বন্ধ থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে কোভিড চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা চুক্তিকে অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়।

চুক্তিটি নিয়ে সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তখন দাবি করেছিল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা করা হয়েছিল। পরে অধিদপ্তরের এ বক্তব্যের ব্যাখ্যা চায় মন্ত্রণালয়। জবাবে আরেক চিঠিতে অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সচিব আসাদুল ইসলামের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল।

পরে অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব আসাদুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। একপর্যায়ে আজাদ মহাপরিচালক পদ থেকে ইস্তফা দেন।

আরও পড়ুন