আতঙ্কে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার আবদুল গফুর ভূঁইয়া কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক শ্রীবাস চন্দ্র দাসের ওপর হামলার পর আতঙ্কে রয়েছেন ওই কলেজের শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে ওই কলেজের অধ্যক্ষ নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জানিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেছেন।
গত বুধবার এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেওয়ায় ওই শিক্ষককে নাঙ্গলকোট মডেল মহিলা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে হেনস্তা করা হয়। পরে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়।
জানতে চাইলে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি শিক্ষাসচিব মহোদয়কে জানানো হয়েছে। আগামীকাল (আজ সোমবার) বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ আমরা সবাই বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা উপলক্ষে ওই কেন্দ্রে যাব। শিক্ষকেরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমরা প্রশাসনকে দিয়ে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করব।’
নাঙ্গলকোট মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা একটায় নাঙ্গলকোট মডেল মহিলা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষক শ্রীবাসের ওপর নাঙ্গলকোট জনতা ব্যাংকের সামনে হামলা চালায় নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও দুষ্কৃতকারী। শ্রীবাস ওই দিন পরীক্ষার হলে নকল করতে বাধা দেওয়ায় তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় আবদুল গফুর ভূঁইয়া কলেজের অধ্যক্ষ কাজী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার নাঙ্গলকোট থানায় মামলা করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সামনের ফটক থেকে সোহাগ ও আকাশ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবদুল গফুর ভূঁইয়া কলেজের দুজন শিক্ষক বলেন, নাঙ্গলকোট মডেল মহিলা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে তাঁদের কলেজের ১৬৫ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে এবং ১২ জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। এসব শিক্ষকের নিরাপত্তা সবার আগে জোরদার করতে হবে।
অধ্যক্ষ কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য আবেদন করেছি।’
নাঙ্গলকোট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। আসমিরা গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। পুলিশ তাদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখবে।