আদালতের জরিমানার কথা বলে টাকা আদায় ওসির

প্রতীকী ছবি

রংপুরের বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার নামে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ময়নুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ময়নুল হক উপজেলার শালবাড়ি খিয়ারপাড়া এলাকার প্রয়াত গোলাম মোস্তফার ছেলে। বৃহস্পতিবার তিনি ডাকযোগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর লিখিত অভিযোগটি পাঠান।

বদরগঞ্জ থানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার বিষয়ে ময়নুল হকের নামে গত ১০ মে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৩৮২) করা হয়েছে। ওসির নির্দেশে উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান ওই জিডি করেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ময়নুল হকের আটক করা বালুর ট্রাক্টরটি ১০ মে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার (নম্বর ৫০) মূলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তবে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ মে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফুল হক কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেননি। জিডিতে কৃষক ময়নুল হকের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে করা যে ৫০ নম্বর মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা–ও সঠিক নয়। ৫০ নম্বর মামলাটি হয়েছে গত ১ মে। এই মামলার নম্বরে ভেজাল মধু বিক্রির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ময়নুল হক জানান, গত ১৪ এপ্রিল সকালে উপজেলার পাঠানহাট এলাকা থেকে এসআই হাবিবুর রহমান ট্রাক্টরটি আটক করে থানায় নিয়ে যান। ১১ মে ওসি হাবিবুর রহমান তাঁকে জানান, অবৈধ বালু পরিবহনের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। টাকা থানায় জমা দিলে ট্রাক্টর ছেড়ে দেওয়া হবে। ওই দিন বিকেলে তিনি থানায় গিয়ে ৫০ হাজার টাকা ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদারের হাতে দেন। টাকা দেওয়ার কোনো রসিদ দেননি ওসি।
এ সম্পর্কে এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৪ এপ্রিল ট্রাক্টরটি আটক করে থানায় নিয়ে এসেছিলাম। ওসির নির্দেশে ১০ মে জিডি করেছি। ঘটনা সঠিক কি না, সেটা আমি জানি না।’

ওসি হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ৫০-৬০টি ট্রাক ধরেছিলাম। আমি আজ (গতকাল) চার দিনের ছুটিতে যাচ্ছি। ফিরে এসেই আপনাকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে ঘটনার বিষয়ে কথা বলব। চারটা দিন অপেক্ষা করবেন।’

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ওই কৃষকের লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। থানার জিডি বই তলব করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।