ইরফান ও তাঁর দেহরক্ষীর রিমান্ড শুনানি আজ

ইরফান সেলিমকেগ্রেপ্তার করে নিয়ে যান র‌্যাবের সদস্যরা।
ফাইল ছবি

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদের আজ বুধবার রিমান্ড শুনানি হবে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিতে চায় পুলিশ। তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় আরেক আসামি এ বি সিদ্দিক ওরফে দীপুকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত তাঁর তিন দিনের পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগের দিন ইরফানের গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পায় পুলিশ।

সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ বি সিদ্দিক ওরফে দীপুকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একসময় সাংসদ হাজি সেলিমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ছিলেন, এখন তাঁর ছেলে ইরফান সেলিমের সঙ্গে থাকেন।

ইরফান সেলিমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এ বি সিদ্দিকের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় চার আসামিই গ্রেপ্তার হলেন।

এদিকে ইরফান সেলিমকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচরণের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়।

রোববার রাতে নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তাকে মারধরের জেরে পরদিন সোমবার পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সাংসদ হাজি সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র‍্যাব। এ সময় র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিমকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার কারণে দিয়েছেন ছয় মাসের কারাদণ্ড। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাস সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে ওই বাড়ি থেকে অস্ত্র, ইয়াবা, ৩৮টি ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে আলাদা মামলা করবে র‍্যাব।

গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খান স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে পেছন থেকে তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে দাঁড়ালে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়িটির জানালায় নক করেন। তখন গাড়ি থেকে লোকজন নেমে ওয়াসিফকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। তাঁর একটি দাঁত পড়ে যায়। ওই গাড়িতে হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান ও তাঁর লোকজন ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পরদিন সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ।