ঈদের জামাতের টাকা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ, ভাঙচুর

রাজনৈতিক ও মসজিদে ঈদের জামাতের টাকা তোলার বিরোধ নিয়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শলইনগর ও খর্দরহুয়া গ্রামে আজ সোমবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় অর্ধশতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খর্দরহুয়া গ্রামের আবু সালেহসহ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টায় খর্দরহুয়া মসজিদে ঈদের নামাজের সময় মসজিদের উন্নয়নের টাকা তোলা হচ্ছিল। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে বক্কার মোল্যা ও নুরুল শেখ নামে স্থানীয় দুই গ্রাম্য মাতবরের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে নামাজের পরপরই উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় গ্রামের ওসমান মিয়া (৩৫), নুরুল শেখ (৫০), সোহাগ (১৬), জুয়েল (২৮), ইউনুছ (৩৫), হারেজ শেখ (৬০), সুফিয়াসহ (১৪) অন্তত ১০ জন আহত হয়।
এ ছাড়া শ্রীকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমির হোসেন মোল্যার বাড়িসহ শলইনগর ও খর্দরহুয়া গ্রামের অর্ধশতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট হয়।

এলাকাবাসী আরও জানায়, মসজিদে হাতাহাতিতে অংশ নেওয়া গ্রাম্য মাতবর বক্কার মোল্যা স্থানীয় শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রামের সমর্থক। অন্যদিকে নুরুল শেখ শ্রীকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমির হোসেন মোল্যার সমর্থক। স্থানীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব নিয়ে উভয় সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে।

তবে ঘটনার বিষয়ে মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম ও আমির হোসেন মোল্যা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। এটিকে শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম ও তাঁর সমর্থকদের পূর্বপরিকল্পিত হামলা দাবি করেছেন শ্রীকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমির হোসেন মোল্যা। তিনি বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যান সংগ্রাম ও তাঁর লোকজন প্রথমে আমার সমর্থক নুরুল শেখসহ অন্যদের ঈদের নামাজ চলাকালে মসজিদের ভেতরেই জখম করে। পরে মুহূর্তের মধ্যে অন্য গ্রামের কয়েক শ লোকজন এনে আমাদের ওপর পুনরায় হামলার পাশাপাশি বাড়িঘরে লুটপাট করে। আমি কিংবা আমার সমর্থকেরা কোনো সংঘর্ষে জড়াইনি। বরং অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছি। এটি সংগ্রাম চেয়ারম্যানের পূর্বপরিকল্পিত হামলাই যদি না হবে, তাহলে ঈদের দিন মুহূর্তের মধ্যে এত লোক এনে হামলা চালানো কীভাবে সম্ভব হলো।’

এ বিষয়ে শ্রীকোল ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম বলেন, ‘এটি মসজিদে ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে গ্রাম্য দুই মাতবরের বিরোধ। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দুপক্ষকে নিবৃত্ত করেছি। আহতদের মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা রয়েছে।