‘ঋণ পরিশোধ করতে’ প্রতিবেশীর তিন বছরের শিশুকে অপহরণ
ঋণ পরিশোধের টাকা জোগাড় করতে আশুলিয়া থেকে প্রতিবেশীর তিন বছরের শিশুকে অপহরণ করেন রিকশাচালক রানা আহমেদ। এরপর শিশুটিকে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে নিয়ে যান তিনি। সেখানে বসে শিশুটির মা–বাবাকে ফোন করে চার লাখ টাকা দাবি করেন রানা আহমেদ। টাকা না দিলে তাঁদের আদরের সন্তানকে মেরে ফেলারও হুমকি দেন তিনি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ ঘণ্টার অভিযান শেষে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র্যাব। আটক করা হয়েছে অপহরণকারী রানা আহমেদকে।
রোববার বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪–এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, শিশুটির বাবা আবুল কালাম আজাদ ও মা সোনিয়া বেগম একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে মেয়েকে আনোয়ারা নামের এক বৃদ্ধ নারীর কাছে রেখে যেতেন। শিশুটি ওই নারীকে নানি বলে ডাকত। ওই ‘নানি’র পাশের রুমেই থাকতেন রানা ।
মোজাম্মেল হক বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকা থেকে শিশুটি অপহৃত হয়। ওই সময় তার মা–বাবা কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে শিশুটিকে বাসা থেকে রিকশায় করে বলিভদ্র বাজারে নিয়ে যান রানা আহমেদ। সেখান থেকে তিনি নতুন গেঞ্জি ও স্যান্ডেল কিনে দেন শিশুটিকে। পরে চন্দ্রা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসে করে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে যান। সেখানে বন্ধু রবিউলের বাড়িতে ওঠেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাবনা ও সিরাজগঞ্জে টানা ২৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে রোববার সকালে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা আহমেদ বলেছেন, ২০০৯ সালে জমি বিক্রি ও ঋণ করে দুবাই যান তিনি। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ২৩ দিন জেল খেটে দেশে ফেরেন। দেশে এসে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিবেশীর মেয়েকে অপহরণ করেন দুই সন্তানের বাবা রানা আহমেদ।