ঋণখেলাপি ২৮০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তলব

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার বেশি অর্থঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া এমন ২৮০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ঋণ ও ঋণ পরিশোধের বিষয়ে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁদের আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা জানাতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

অবসায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে আদালতে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম।

গত বছরের নভেম্বর মাসে কোম্পানি আদালত পিপলস লিজিংয়ের ঋণগ্রহীতাদের তালিকা দাখিল করতে বলেন বলে জানান আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ অনুসারে ঋণগ্রহীতা ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা গত বছরের ২৩ নভেম্বর আদালতে দাখিল করা হয়। ওই ঋণগ্রহীতাদের তালিকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার বেশি অর্থঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া ২৮০ জনকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালতে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণসহ ২৮০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পিপলস লিজিংয়ের পাওনা ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকার বেশি বলে জানান মেজবাহুর রহমান। তিনি বলেন, এ ঋণ ও ঋণ পরিশোধ বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করতে ২৮০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

আইনজীবীর দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে আবেদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুনানি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অবসায়নকালে দায়িত্ব পালনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়।

পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী তিনি কানাডায় আছেন।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল ২ হাজার কোটি টাকা। পিপলসের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা, এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ। ২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিক লোকসান গুনছে প্রতিষ্ঠানটি।