করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির খবর নিয়ে সাংবাদিকের ওপর হামলা

সিলেটের জৈন্তাপুরে এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা। অভিযোগ, এক ব‌্যক্তি করোনা আক্রান্ত এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করে ফেসবুকে শেয়ার করায় সাংবাদিক রেজওয়ান করিমের (৩৫) ওপর এ হামলা। তবে হামলাকারীর দাবি, অন্য বিষয়ে কথা–কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়েছে। করোনা আক্রান্তের খবর প্রকাশ করা নিয়ে নয়।

রেজওয়ান করিম সাব্বির বর্তমানে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি নয়া দিগন্ত এবং সিলেটের স্থানীয় দৈনিক সিলেট মিরর পত্রিকায় জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জৈন্তাপুর বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত‌্যক্ষদর্শী দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিনিধি এম এ হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ১৬ এপ্রিল ‘জৈন্তাপুর উপজেলার এক ব‌্যক্তি করোনা পজিটিভ’ গণমাধ‌্যমে প্রকাশিত এমন খবর ফেসবুকে শেয়ার করেন সহকর্মী সাংবাদিক রেজওয়ান করিম। এ নিয়ে আবুল হাশিমসহ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত ওই ব‌্যক্তি পজিটিভ নয়, নেগেটিভ বলে মন্তব‌্য করেন। এরই জের ধরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে রেজওয়ান করিমকে গালিগালাজ করেন ছাত্রদল নেতা আবুল হাশিম। এর প্রতিবাদ করে রেজওয়ান প্রকাশিত খবরে চিকিৎসকের বক্তব‌্য রয়েছে বলে জানান। এরপরই অতর্কিতভাবে বাঁশ দিয়ে রেজওয়ানের মাথাসহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালান হাশিম। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় সহকর্মীকে উদ্ধার করেন। এরপর জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ‌্য কমপ্ল‌েক্সে এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এম এ হানিফ বলেন, চিকিৎসকেরা তাঁর এক্স–রে, সিটি স্ক‌্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলো করানোর চেষ্টা চলছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর বলে জানান তিনি।

এম এ হানিফ বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত ওই ব‌্যক্তি ছাত্রদল নেতার কোনো আত্মীয় নন। তারপরও কেনো করোনা আক্রান্ত ব‌্যক্তির খবর প্রকাশ করা নিয়ে গালিগালাজ এবং হামলা হলো সেটি বুঝতে পারছি না।’

হামলাকারী জৈন্তাপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আবুল হাশিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক রেজওয়ান আমার বাল‌্যবন্ধু। প্রাথমিক বিদ‌্যালয় থেকে আমরা একসঙ্গে লোখাপড়া করেছি। মঙ্গলবার সামান‌্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। বিষয়টিকে একটি মহল অন‌্য দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলাচ্ছে।’

তবে তিনি কী বিষয় নিয়ে হাতাহাতি হয়েছে, সেটি বলতে চাননি। তিনি বলেন, করোনার কোনো বিষয় নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয়নি। বিষয়টি মুরব্বি এবং উপজেলা প্রেসক্লাব নেতাদের সঙ্গে বসে সমাধানের উদ‌্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ‌্যামল বণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক সাংবাদিকের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। সাংবাদিক খবর প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ‌্যমে শেয়ার করবেন, এটাই স্বাভাবিক। কোনো অভিযোগ থাকলে ব‌্যবস্থা নিতে থানা এবং আদালত রয়েছে। আমরা সাংবাদিকের সহকর্মী এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আহত ওই সাংবাদিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযোগ দেওয়া হলে আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।’