কলোবাজারে বিক্রি করা ১১৫ বস্তা সরকারি চাল জব্দ

জামালপুর সদর ও মেলান্দহ উপজেলায় কলোবাজারে বিক্রি করা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১১৫ বস্তা চাল জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের চিকারপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ৮৫ বস্তা ও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের একটি গুদাম থেকে ৩০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।

স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের চিকারপাড়া গ্রামের খাদ্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন। এ সময় ওই বাড়ি থেকে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৮৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে খাদ্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম পালিয়ে যান।
অন্যদিকে মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের বেতমারী গ্রামের খাদ্য ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বারের গুদামে অভিযান চালান ইউএনও তামিম আল ইয়ামীন। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। এই চাল হতদিরদ্রের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা ছিল। অভিযানের সময় দুটি স্থানে কেউ আটক হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, করোনাভাইরাসের কারণে হতদরিদ্র মানুষের অবস্থা এখন খুব খারাপ। তাঁরা ১০ টাকা কেজিতে এ চাল কিনে কোনো রকমে বেঁচে রয়েছেন। কিন্তু হতদরিদ্রদের এসব চাল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ডিলাররা তাঁদের মধ্যে বিক্রি না করে, গোপনে খাদ্য ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে হতদরিদ্র লোকজন বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই বাসিন্দাদের দাবি, কলোবাজারে চাল কিভাবে গেলো, বিষয়টি প্রশাসনিক তদন্ত করে ওইসব ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার। তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা গেলেই, এসব কলোবাজারি ঠেকানো যাবে।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, 'এসব চাল হতদরিদ্রদের মধ্যে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু চালগুলো একটি বাড়িতে রয়েছে—এমন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে জব্দ করেছি। তবে কাউকে আটক করা যায়নি। চালগুলো কে বা কারা বিক্রি করেছেন, তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

একই মন্তব্য করলেন মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামিম আল ইয়ামীন। তিনি বলেন, 'চালের বস্তাগুলো ওই গুদাম থেকে জব্দ করা হয়েছে। কোন ডিলার তাঁর বরাদ্দের চালগুলো কলোবাজারে বিক্রি করেছেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। সরকারি কর্মসূচির চাল কলোবাজারে বেচা-কেনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'