কাকরাইলে মা–ছেলে হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল করিম।
ছবি: আসাদুজ্জামান

রাজধানীর কাকরাইলে মা-ছেলে জোড়া খুনের মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল আলম এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন নিহত শামসুন্নাহারের স্বামী আবদুল করিম, আবদুল করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও শারমিনের ভাই আল আমিন ওরফে জনি।
রায় ঘোষণার আগে তিন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ে আদালত বলেছেন, ছেলে আর স্ত্রী খুনের প্রধান পরিকল্পনাকারী বাবা আবদুল করিম। নিজের হীন উদ্দেশ্যে বাবা করিমের পরিকল্পনায় পরস্পর যোগসাজশে মা-ছেলেকে খুন করা হয়। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

মামলার নথিপত্র বলছে, কাকরাইলে মা-ছেলে জোড়া খুনের মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এই হত্যা মামলায় খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন আসামি আল আমিন ও তাঁর বোন শারমিন আক্তার।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আল আমিন।
ছবি: আসাদুজ্জামান

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, আসামি আল আমিন কাকরাইলের বাসায় ঢুকে শামসুন্নাহার ও তাঁর ছেলে সাজ্জাদুল করিমকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পারিবারিক ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পনা করে তাঁদের হত্যা করেন আসামিরা।

পুলিশের দেওয়া ওই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালত তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তিন আসামি কারাগারে আছেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনকে হাজির করা হয়।

সন্ধ্যায় তিনি ফ্ল্যাটে ঢোকেন। এ সময় শামসুন্নাহার দরজা খুলে দেন। ঘটনার সময় তিনি রান্নাঘরে ছিলেন। কেউ একজন এসে বাইরে থেকে রান্নাঘরের দরজা লাগিয়ে দেয়।এরপর তিনি ‘ম্যাডাম’ শামসুন্নাহারের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুনতে পান।

নিহত শামসুন্নাহারের বড় ছেলে মশিউর করিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মা ও ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিচারের জন্য তাঁরা এত দিন অপেক্ষা করেছিলেন। যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। তাঁরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান। মামলার নথিপত্রের তথ্য বলছে, কাকরাইলের রাজমণি-ঈশা খাঁ হোটেলের বিপরীত পাশে তলাগলির ছয়তলা একটি ভবনের পাঁচতলায় থাকতেন শামসুন্নাহার ও তাঁর ছেলে সাজ্জাদুল করিম।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শারমিন আক্তার মুক্তা (আবদুল করিমের তৃতীয় স্ত্রী)।
ছবি: আসাদুজ্জামান

ভিআইপি রোডের ৭৯/১ মায়াকানন নামের এই বাসায় ঘটনার সময় গৃহকর্মী ছিলেন। লাশ উদ্ধারের সময় তাঁরা দেখেছেন, মায়ের গলায় ছুরির আঘাত ছিল আর ছেলের শরীর ছিল রক্তাক্ত। গৃহকর্মী বলেন, সন্ধ্যায় তিনি ফ্ল্যাটে ঢোকেন। এ সময় শামসুন্নাহার দরজা খুলে দেন। ঘটনার সময় তিনি রান্নাঘরে ছিলেন। কেউ একজন এসে বাইরে থেকে রান্নাঘরের দরজা লাগিয়ে দেয়।

মা ও ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিচারের জন্য তাঁরা এত দিন অপেক্ষা করেছিলেন। যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। তাঁরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান।
নিহত শামসুন্নাহারের বড় ছেলে মশিউর করিম

এরপর তিনি ‘ম্যাডাম’ শামসুন্নাহারের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুনতে পান। গৃহকর্মী বলেন, বাসার দারোয়ান এসে রান্নাঘরের দরজা খুলে দিলে তিনি সেখান থেকে বের হন।