কৃষকের হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে এক কৃষককে হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর নাম নুরুল আমিন (৫৫)। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ রুবেল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, চাটখিল উপজেলার নোয়াখোলা ইউনিয়নের শ্রীনগরের কৃষক নুরুল আমিন (৫৫) গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির পাশের মসজিদে তারাবিহর নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির কয়েকশ গজ দূরে একটি বাগানে তাঁর হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার লোকজন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি থানায় জানানো হয়।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২ দিকে চাটখিল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নুরুল আমিনের লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় পুলিশ লাশের পাশে পড়ে থাকা একটি রক্তাক্ত হাতুড়িও জব্দ করে। পুলিশের ধারণা, নিহত ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তরা হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম নুরুল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে হাত-পা বেঁধে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নুরুল আমিনকে কারা কী কারণে হত্যা করেছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এলাকায় তাঁর সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে একটি পক্ষের বিরোধ রয়েছে।

ওসি আনোয়ারুল বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রুবেল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা হাতুড়ি জব্দ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করার চেষ্টার পাশাপাশি এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জমির বিরোধে আহত ব্যক্তির মৃত্যু
জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের খাসেরহাট এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আবদুল কুদ্দুস (৫৫) নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার ভোরে মারা গেছেন। তিনি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, খাসেরহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুসের (৫৫) সঙ্গে প্রতিপক্ষ নুরুল হক ও ফয়সালের জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে ৫ মে প্রতিপক্ষের লোকজন আবদুল কুদ্দুসকে একটি পুরোনো ঘর মেরামত করতে গেলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা ওই ঘরটিও ভেঙে নিয়ে যায়।
আবদুল কুদ্দুছের ছেলে মো. মাসুদ অভিযোগ করেন, ৫ মের ঘটনার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর বাবাসহ পরিবারের ছয়জনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। ঘটনার পর তাঁরা তাঁর বাবাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিলেও দুই দিন পর অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাঁরা তাঁকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর সোয়া চারটার দিকে তাঁর বাবা মারা যান। মাসুদ বলেন, পূর্বের ঘটনায় তাঁরা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। এখন একটি হত্যা মামলা করবেন।
জানতে চাইলে সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল কুদ্দুস ও তাঁর প্রতিপক্ষের মধ্যে একাধিক পাল্টাপাল্টি মামলা রয়েছে। তিনি শুনেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল কুদ্দুস শরীরে চিনির শূন্যতার কারণে মারা গেছেন। এরপরও পরিবার যদি অভিযোগ দেয়, তা মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। এ কারণে হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।