
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত শিশু শুভ কাজীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ এশা জানাজা শেষে উপজেলার হযরতপুরের ঢালিকান্দি গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাতেই শুভ’র চাচা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
এদিকে শুভ নিহত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরও এখনো কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় শুভ’র পরিবার, স্বজন ও ঢালিকান্দি গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের মধুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গতকাল সকাল ১০টার দিকে রানা মোল্লা নামের এক ব্যক্তি ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারার চেষ্টা চালান। রানা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন আয়নালের লোক হিসেবে পরিচিত। তাঁদের তাণ্ডবে ওই কেন্দ্রের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়লে নয় বছরের শিশু শুভ কাজী মারা যায়। ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শুভ তার মায়ের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসেছিল। তার বাবা হালিম কাজী পেশায় অটোরিকশাচালক।
গতকাল সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত শেষে শুভর লাশ তার গ্রামের বাড়ি ঢালিকান্দি নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ এশা জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
আজ ঢালিকান্দি গ্রামে শুভর’র বাড়ি গিয়ে দেখা যায় ছেলেকে হারিয়ে মা সুবর্ণা বেগম প্রলাপ বকছেন আর একটু পরপরই জ্ঞান হারাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরলেই ছেলে কোথায় আছে জানতে চাচ্ছেন।
শুভ’র ভাই রমিজ উদ্দিন মিয়া জানান, আমার ছোট ভাই শুভ হত্যার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
নিহতের বাবা হালিম কাজী জানান, ‘লোকজন ভোটাভুটি করল আর এর কারণে আমার পোলাডারে সন্ত্রাসীরা গুলি কইরা মারলো। আমি তাগো শাস্তি চাই। শুভ নাই আমি কারে নিয়া থাকমু।’
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস হোসেন বলেন, শুভ কাজী নিহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল রাতেই মামলা হয়েছে। তার চাচা সালাল কাজী বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতনামা ২০-২২ জন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।