গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ, স্বামীর অভিযোগ নিজের মা-বাবার বিরুদ্ধে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি আবাসিক ভবন থেকে মিতানূর (১৯) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ধানমন্ডির ৮/এ সড়কের ৭৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিজের মা-বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন নিহত গৃহবধূর স্বামী আদনান আবদুল্লাহ।

দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আদনান ও মিতানূরের। আদনানের অভিযোগ, তাঁর বাবা এ বি এম এ কাফি ও মা সুরাইয়া বেগমের নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর স্ত্রী। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে ধানমন্ডি মডেল থানায় মামলা করেছেন মিতানূরের বাবা আবদুল মতিনও। মামলার পর মিতানূরের শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা জানান, মিতানূর তাঁর স্বামী, তিন মাস বয়সী ছেলে ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ধানমন্ডির ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। মিতানূরের শ্বশুর এ বি এম এ কাফি সাবেক শুল্ক কর্মকর্তা। তাঁর বাবা আবদুল মতিন পেশায় একজন ঠিকাদার। বিয়ের পর থেকেই মিতানূরের শিক্ষাগত যোগ্যতা, তাঁর বাবার আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রায়ই গালমন্দ ও নির্যাতন করতেন তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি। এমনকি গর্ভবতী অবস্থায়ও তাঁকে মারধর করতেন। স্ত্রীকে নির্যাতন করতে নিজের মা-বাবাকে বহুবার নিষেধ করেন স্বামী আদনান। গত রোববার রাত আটটার দিকে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে মিতানূরের ঝামেলা হয়। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করতে যান শ্বশুর-শাশুড়ি। তখন মিতানূর তাঁর শোবার ঘর-সংলগ্ন বাথরুমে যান। অনেকক্ষণ পরও বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় চাবি দিয়ে দরজা খোলা হয়। তখন বাথরুমের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় মিতানূরকে পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সন্ধ্যায় মিতানূরের লাশ নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় দাফন করা হয়েছে।

স্ত্রীর আত্মহত্যার জন্য স্বামী আদনান আবদুল্লাহ নিজের মা-বাবাকেই দায়ী করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মা সব সময় আমার স্ত্রীর ওপর অত্যাচার করতেন। নানাভাবে নির্যাতন করতেন।’

ধানমন্ডি মডেল থানার উপপরিদর্শক তৌকির আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, মিতানূরকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আবদুল্লাহ হিল কাফি প্রথম আলোকে বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ধানমন্ডি মডেল থানায় মিতানূরের শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।