গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে চুল কেটে নির্যাতন, স্বামী গ্রেপ্তার

শারীরিক নির্যাতন করার পর পাবনায় গৃহবধূর চুল কেটে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ছবি: ফোকাস বাংলা
শারীরিক নির্যাতন করার পর পাবনায় গৃহবধূর চুল কেটে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ছবি: ফোকাস বাংলা

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় খাদিজা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিপক্ষে। উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে স্বামী শাহেদ ফকির (৩২), শ্বশুর মালেক ফকির (৬০) ও শাশুড়ি শাহিদা খাতুনকে (৫৫) আসামি করে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার পর আজ শুক্রবার দুপুরে স্বামী শাহেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে শাহেদ ও খাদিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর খাদিজা জানতে পারেন শাহেদ মাদকাসক্ত। কিছুদিন ধরেই খাদিজাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন শাহেদ। কিন্তু খাদিজা রাজি না হওয়ায় বেশ কয়েকবার তাঁদের ঝগড়া হয়। গতকাল সন্ধ্যায় আবারও দুজনের ঝগড়া হয়। এ সময় শাহেদ ও তাঁর বাবা-মা মিলে খাদিজাকে মারধর করেন। রাত তিনটার দিকে ঘরে ঢুকে আবারও খাদিজার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে চুল কেটে দেওয়া হয়। বিষয়টি কাউকে জানালে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে খাদিজা শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

খাদিজার মামা আবুল কালাম বলেন, টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রায়ই খাদিজাকে মারধর করতেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা মেয়েটির চুল কেটে দিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন খাদিজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের অত্যাচারে আমি অতিষ্ঠ। সন্তানদের মুখের দিক তাকিয়ে এত দিন সংসারে ছিলাম। কিন্তু আর পারছি না। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই।’

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, মামলা দায়েরের পর প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। শুক্রবার দুপুরেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী শাহেদ ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর মা ও বাবা পলাতক আছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।