চাঁদা নিয়ে ছাত্রলীগের মারামারি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে নিজেদের এক নেতাকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন ও আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে এক সাংবাদিককে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ভেঙে পড়া প্রায় ৪০টি গাছের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। আলাল নামের এক ব্যক্তি ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় নিলামটি পান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহিমের আত্মীয়। কিন্তু নিলাম পাওয়ার পর ছাত্রলীগের উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল রানা রহিমের কাছে চাঁদা দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে শহীদ মিনারের পাশে ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানা অপর দুই নেতা আব্দুর রহিম ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেনের সঙ্গে চাঁদা নিয়ে কথা বলছিলেন।
এ সময় জুয়েলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক তারেক মো. জুবায়ের ও তানভীর হাসান খান, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন, উপ-বিতর্ক ও নাট্য বিষয়ক সম্পাদক ঠাকুর দেব কুমার আচার্য্য, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সজীব কুমার সাহা ও শহীদ রফিক-জব্বার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান।
কথাবার্তার একপর্যায়ে জুয়েলের সঙ্গে আবদুর রহিমের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় রহিমকে জুয়েল ও তাঁর সঙ্গের নেতা-কর্মীরা মারধর করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দা, রড ও পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কামাল উদ্দিন হলের দিকে আসে। কামাল উদ্দিন হলের নেতা-কর্মীরাও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হলের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রীনওয়াচবিডি ডট কম অনলাইন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন ছবি তুলতে গেলে তাকে মীর মশাররফ হোসেন হলের নেতা-কর্মীরা মারধর করে।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদের হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যান।
এ বিষয়ে আবদুর রহিম বলেন, ক্যাম্পাসে ঝড়ে ভেঙে পড়া প্রায় ৪০টি গাছের দরপত্র পাই আমরা। এর পর জুয়েল আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। কিন্তু না দেওয়ায় জুয়েল এবং তাঁর সঙ্গের নেতারা আমাকে মারধর করেছে। এ বিষয়ে জুয়েল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ভুল বোঝাবুঝি। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা হয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমঝোতার জন্য আলোচনা করছে।