চাল নিয়ে অনিয়মে চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের জের ধরে উত্তেজনা

জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণে অনিয়মের দায়ে ভোলার মনপুরা উপজেলার ১ নম্বর মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া চরফ্যাশন উপজেলার তিন ইউনিয়নের তিনজনের জেল-জরিমানা হয়েছে।

এদিকে চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে পিটিয়ে জখম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পরে গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার মনপুরার রামনেওয়াজ বাজার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দুই পক্ষের ছয়জনকে আটক করেছে।

মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার দাস বলেন, জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের ঘটনা তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। এ জন্য ১ নম্বর মনপুরা ইউপির চেয়ারম্যান আলমগীর হাওলাদারকে জেলা প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্ত করে। কিছুদিন আগে চেয়ারম্যানকে অনিয়ম অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। গতকাল রাত ৯টার দিকে ইউনিয়নের কুলগাজীর তালুক গ্রামে মো. সোহাগ নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটে। এটাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের সাবেক দুই চেয়ারম্যান পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনপুরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার এবং সদ্য বরখাস্ত চেয়ারম্যান আলমগীর হাওলাদার পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। দুই পক্ষের লোকজনই গতকাল রাত থেকে রামনেওয়াজ বাজার এলাকায় দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। পুলিশ দুই পক্ষের ছয়জনকে আটক করেছে।

সদ্য বরখাস্ত আলমগীর হাওলাদার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ৪ হাজারের বেশি জেলে পরিবার। আমি চাল পেয়েছি ৮০১ জনের। সবাইকে চাল দেওয়া সম্ভব না। তার পরও সঠিকভাবে চাল বিতরণ করেছি। কিন্তু সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তদন্ত করিয়েছেন। সে তদন্ত সঠিক হয়নি। ওই তদন্তে আলাউদ্দিনের লোকজন সাক্ষী দিয়েছেন। আমাকে বরখাস্ত করার পর আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. সোহাগকে তাঁর লোকজন পিটিয়ে জখম করেন।’


সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আলমগীর ঘটনা সাজিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছেন।’

মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'পরিস্থিতি এখন শান্ত। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। বড় ধরনের সংঘাত হতে পারত। দুই পক্ষের ৬ জনকে আটক করেছি। এখনো পুলিশ পাহারা আছে।'

এদিকে চরফ্যাশনের ইউএনও মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, গতকাল জেলেদের চাল কম দেওয়া, বেনামে চাল তোলা, একজনের চাল অন্যজন তুলে লুটপাট করার দায়ে তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। নীলকমল ও আব্দুল্যাহপুর ইউনিয়নের দুজনকে মাপে কম দেওয়ার দায়ে ৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া নুরাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৭-৮টি জেলে কার্ডের চাল তুলে কার্ডধারীদের না দিয়ে মেরে দেওয়ায় মো. মিজানুর রহমানকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে।