চুরি গেছে প্রচার করা শিশুর মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংকে, মা–বাবা আটক

নবজাতক
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের পাশ থেকে চুরি গেছে বলে প্রচার করা ১৫ দিন বয়সী শিশু সোহানের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক থেকে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে শিশু সোহানের বাবা সোহাগ হোসেন ও মা ফাতেমা খাতুনকে পুলিশ আটক করেছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাওয়ালখালী গ্রামের সোহাগ-ফাতেমা দম্পতি শিশু চুরি গেছে বলে প্রচার করেন।

শিশুটির নানি নূর নাহার খাতুন বলেন, ১১ নভেম্বর সাতক্ষীরা শহরের আনোয়ারা ক্লিনিকে তাঁর মেয়ে ফাতেমা খাতুন একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। শিশুটির নাম রাখা হয় সোহান হোসেন। এরপর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে যেতে হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত বুধবার তাঁরা সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

চিকিৎসকের পরামর্শপত্রে দেখা যায়, জন্মের পর থেকে শিশু সোহান জন্ডিস, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে ভুগছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, শিশুটি প্রতিবন্ধী ছিল। এসব কারণে বাবা হত্যা করেছেন বলে ধারণা।
মীর্জা সালাহ উদ্দিন, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

শিশুটির মা ফাতেমা খাতুন অভিযোগ করে আসছিলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বারান্দায় ছোট মশারি টাঙিয়ে তার মধ্যে শিশুকে ঘুম পাড়ান। তিনি নিজে অসুস্থ থাকায় সোহানের পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে তাঁর ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখেন, মশারির মধ্যে সন্তান নেই। এরপর থেকে খোঁজাখুঁজি করে শিশুটিকে আর পাওয়া যায়নি।

সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ উদ্দিন বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে শিশু সোহানের মা ফাতেমা খাতুনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার পেছনের ঘটনা বের হয়ে আসে। তাঁর স্বামী সোহাগ হোসেন তাঁর কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়ে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। পরে সবাইকে বলেন, তাঁদের শিশুটি কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শপত্রে দেখা যায়, জন্মের পর থেকে শিশু সোহান জন্ডিস, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে ভুগছিল। তা ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের এক মাস আগে শিশুটি জন্ম নেয়। তার ওজনও অনেক কম ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, শিশুটি প্রতিবন্ধী ছিল। এসব কারণে শিশুটির বাবা তাকে হত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটির মৃতদেহ সাতক্ষীরা সদর থানায় রাখা হয়েছে। আজ শনিবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে।