জাজিরায় যুবককে কুপিয়ে ‘হাত-পা’ বিচ্ছিন্ন

দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত যুবক লিটন কবিরাজ। জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুধবার রাতে
ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় যুবককে কুপিয়ে এক হাতের কবজি ও এক পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত ৮টার দিকে জাজিরা পৌরসভার কবিরাজ কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতের নাম লিটন কবিরাজ (৪৩)। স্থানীয়রা প্রথমে তাঁকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে সেখান থেকে রাত ৯টার দিকে তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।

আহত লিটন কবিরাজ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল হক কবিরাজ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেকান্দার হাকিদারের সমর্থকেরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

জাজিরা থানার পুলিশ জানায়, গত বছর জাজিরা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক কবিরাজ। নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। আর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন সেকান্দার হাকিদার। পরাজিত হন সিরাজ কবিরাজ। নির্বাচনের পর থেকে সিরাজের সঙ্গে আবদুল হক কবিরাজ ও সেকান্দার হাকিদারের বিরোধ শুরু হয়। আহত লিটন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সিরাজের আত্মীয় ও সমর্থক। তিন মাস আগে তারা কাউন্সিলর সেকান্দারের ভাই তোফাজ্জল হাকিদারকে কুপিয়ে আহত করেন। পুলিশের ধারণা, ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে লিটনের ওপর এ হামলা হয়েছে।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ওই যুবকের বাম হাতের কবজি ও ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর ডান হাতের তিনটি আঙুলও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহত লিটন কবিরাজের বরাত দিয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া-জাজিরা সার্কেল) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পৌর নির্বাচনের বিরোধ নিয়ে সাবেক মেয়র আবদুল হক কবিরাজ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেকান্দার হাকিদারের সমর্থকেরা লিটনের ওপর হামলা চালিয়েছে। লিটন পুলিশের কাছে দুজনের নাম বলেছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এখনো থানায় মামলা হয়নি।

তবে অভিযুক্ত সাবেক মেয়র আবদুল হক কবিরাজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে কখনো জড়িত হই না। লিটনের ওপর হামলার ঘটনায়ও আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। রাজনৈতিক কারণে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’

জাজিরা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সেকান্দার হাকিদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে আমি ও আবদুল হক কবিরাজ অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নের কাজে থানায় ছিলাম। সেখানে বসেই লিটনের ওপর হামলার কথা জানতে পেরেছি। তাদের নিজেদের বিরোধেই এ ঘটনা ঘটেছে। এখন আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’