টাকা না দেওয়ায় ঘর ভেঙে তছনছ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সোনাতলা বান্দর মার্কেট এলাকায় গৃহবধূ বিউটি আক্তারের ঘর ভেঙে তছনছ করা হয়েছে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সোনাতলা বান্দর মার্কেট এলাকায় গৃহবধূ বিউটি আক্তারের ঘর ভেঙে তছনছ করা হয়েছে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সোনাতলা বান্দর মার্কেট এলাকায় বন বিভাগের লোকজনকে টাকা না দেওয়ায় বিউটি বেগম নামের এক গৃহবধূর ঘর ভেঙে তছনছ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বিউটি আক্তার গাজীপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় বিট কর্মকর্তা আবদুল আহাদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন বন প্রহরী হারুন অর রশীদ, বশির আহমেদ ওরফে বাবুল, বন ওয়াচার (প্রহরী) বেলাল হোসেন, অফিস সহায়ক ফয়েজ মিয়া। পাশাপাশি বিউটি আক্তার কালিয়াকৈর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আরজি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর রেঞ্জের আওতায় রঘুনাথপুর ফরেস্ট অফিসে বিট কর্মকর্তা নেই। তাই মৌচাক বিট অফিসের কর্মকর্তা আবদুল আহাদ সেটিরও দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলার সোনাতলা এলাকায় গৃহবধূ বিউটি আক্তার, তাঁর স্বামী আয়নাল হক বনের খোলা জায়গায় ঘর বানিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছেন। ঘরের কিছু টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি কয়েকটি টিন পরিবর্তন করেন তাঁরা। এ জন্য রঘুনাথপুর বিটের বন প্রহরীরা বিউটি আক্তারের কাছে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় শনিবার দুপুরে বিট কর্মকর্তা আবদুল আহাদের নেতৃত্বে বিউটির ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। ঘরের সঙ্গে আসবাব ও মূল্যবান মালামাল তছনছ করা হয়। অথচ ওই বাড়ির আশপাশে ২০-২২ জন বনের জমিতে নতুন তুলে বসবাস করছেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য তাঁদের ঘর ভাঙা হয়নি।
বিউটির ঘর ভাঙার সময় বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিলসহ এলাকার বেশ কয়েকজন বাধা দেন। এ ঘটনায় বিট কর্মকর্তা আবদুল আহাদ বাদী হয়ে ইব্রাহীম খলিলসহ শতাধিক ব্যক্তির নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘বিউটির ঘর ভাঙার সময় আমি প্রতিবাদ করেছি। এ জন্য আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
বিট কর্মকর্তা আবদুল আহাদ টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, অনেক আগে বনের জমিতে যেসব ঘর তোলা হয়েছে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হয় না। কিন্তু নতুন করে যারা ঘর ওঠাচ্ছে সেগুলো ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোতালেব মিয়া বলেন, পৃথক দুটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ দুটির তদন্ত চলছে।