টেকনাফের সেই লিয়াকতের বিরুদ্ধে মামলা

বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী

ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবির অভিযোগে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে। অভিযোগ ওঠা অন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নান ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার এসআই মো. নজরুল। ঘটনার সময় তাঁরা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। অন্য চার আসামি হলেন এস এম সাহাবুদ্দীন, বিষ্ণুপদ পালিত, কাজল কান্তি বৈদ্য ও জিয়াউর রহমান। তাঁরা চারজনই চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী।

আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মামলাটি করেন।

বাদীর আইনজীবী জুয়েল দাশ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনারকে তদন্তের নিদেশ দিয়েছেন। আরজিতে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার, সদরঘাট থানার সাবেক ওসি প্রণব চৌধুরী, উখিয়া থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি মজিনা আক্তারসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। আদালত সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন। তবে আদেশে উল্লেখ করেছেন, তদন্তে যদি তাঁদের কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে অপরাধ আমলে নেবেন আদালত।

মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষের করা মামলার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন লিয়াকত। ওই সময় লিয়াকত নগর ডিবিতে এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামির খালাতো বোনকে বাদী সাজিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দেন। ওই মামলায় জামিনে হলে লিয়াকত তাঁকে গাড়িতে তুলে পুরো শহর ঘোরান। ক্রসফায়ারের কথা বলে আড়াই লাখ টাকা নেন। লিয়াকতের সঙ্গে যুক্ত অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩টি মিথ্যা মামলা হয় লিয়াকতের সাহায্যে। ১০টিতে খালাস পান। বাকি তিনটি চলছে।

এদিকে মামলা করার আগে ব্যবসায়ী জসিম ১৩ আগস্ট নগর পুলিশ কমিশনার বরাবর লিয়াকতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। লিয়াকত বর্তমানে টেকনাফে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খুনের মামলায় কারাগারে আছেন। তবে মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাহাবুদ্দিনসহ অন্যরা তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

মামলার বাদী জসিম উদ্দিন আদালত প্রাঙ্গণে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভয়ে এত দিন মামলা করতে পারিনি। লিয়াকত জেলে যাওয়ার পর কিছুটা সাহস হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের দেওয়া একের পর এক মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি।’