ডোবায় ভাসছিল মা ও ছেলে-মেয়ের লাশ

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বাড়ির পাশের ডোবা থেকে মা ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ
সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে  মা ও  দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া শিয়ালডাঙ্গী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, এটা হত্যা না আত্মহত্যা; তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন মা আরিফা আক্তার (২৮), মেয়ে আঁখি আক্তার (১০) ও ছেলে আরাফাত (৪)। আরিফার স্বামীর নাম আকবর আলী। এই দম্পতির মেয়ে আঁখি ভরনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।

পুলিশ ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গ্রামের একটি ডোবায় মা আরিফা আক্তার ও মেয়ে আঁখি আক্তারের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা তুলতে যান। এ সময় তাঁরা পানিতে ডুবে থাকা আরাফাতের সন্ধান পান। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে আরিফার স্বামী আকবর আলীর ভাষ্য, গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে তিনি বিছানায় তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে না পেয়ে বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকেন। বাড়িতে না পেয়ে আকবর সকালে ভরনিয়া পূর্বপাড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে খোঁজ নেন। কিন্তু সেখানে না পেয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন।

আরিফা আক্তারের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘১৩ বছর আগে আকবরের সঙ্গে আরিফার বিয়ে হয়। আমার মেয়েটি খুব চাপা স্বভাবের। সংসারে কষ্টের কথা চেপে রাখত। আমাকে কখনো কিছু বলত না। লোকমুখে আকবর ও আরিফার মধ্যে ঝগড়ার কথা শুনতাম। কী কারণে এমনটি হলো, মাথায় আসছে না।’

ওই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. মাইনুদ্দিন বলেন, আরিফার স্বামী আকবর ফেরি করে জিনিস বিক্রি করেন। সংসারে অভাব ছিল। অভাব-অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

খবর পেয়ে রানীশংকৈল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তোফাজ্জল হোসেন, রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে মুঠোফোনে ওসি বলেন, মা ও তাঁর দুই সন্তানের লাশ বাড়ির সামনের ডোবায় পড়েছিল। উদ্ধারের সময় মা ও তাঁর দুই সন্তানের নাক-মুখে ফেনা দেখা গেছে। এটি বিষক্রিয়ার কারণেও হতে পারে। এটা হত্যা না আত্মহত্যা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।