দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন বাড়িওয়ালা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পোশাকশ্রমিক দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন এক বাড়িওয়ালা। স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দুজনকেই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। আজ বুধবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার কদমতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় থানা–পুলিশের কাছে গেলেও সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করে ওই দম্পতি।

ওই নারী পোশাকশ্রমিকের স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত অনন্ত সোয়েটার কারখানায় কাজ করেন। তিনিও ওই কারখানার ওয়াশিং বিভাগে কাজ করেন। তাঁরা দুজন সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী কদমতলীতে আবদুস সামাদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁর স্ত্রীর কয়েক দিন ধরে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তাঁরা নমুনা পরীক্ষা করান। গতকাল মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজিটিভ আসে। বিষয়টি জানতে পেরে আজ সকালে বাড়িওয়ালা আবদুস সামাদ তাঁদের দুজনকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে তাঁরা সহায়তার জন্য ছুটে যান সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়। থানা–পুলিশ থেকে তাঁদের কোনো সহায়তা না করে শিমরাইল সাজেদা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

ওই পোশাকশ্রমিক বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। বাড়িওয়ালা তাঁর স্ত্রী ও তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। পরে তিনি জেলা করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাঁর স্ত্রীকে সাজেদা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করান। এখন তিনি কোথায় থাকবেন, এটা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, তাঁর কোনো যাওয়ার জায়গা নেই।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বাড়িওয়ালা আবদুস সামাদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। নুমনা পরীক্ষায় তাঁদের নেগেটিভ ধরা পড়লে তবেই তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারবেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ। তবে স্বামীর নেগেটিভ। ওই নারী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো করোনা রোগী নন। তিনি বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন। কিন্তু তাঁদের এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে করে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আইসোলেশনে থাকা কোনো করোনা রোগীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।