দুই বছরে একে একে ১৫ বাসে ডাকাতি করে চক্রটি

ডাকাতি
প্রতীকী ছবি

২ বছরে ১৫ বাসে ডাকাতি করেছেন তাঁরা। আর গত মে মাসে ডাকাতি করেছেন তিনটি দূরপাল্লার বাসে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে আরেকটি বাসে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে এই ডাকাত দলের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

র‌্যাব বলছে, ডাকাত সর্দার হীরার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ এই চক্র গত ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে যশোরের বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ২৫ মে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস পরিবহন ও ২৯ মে ঢাকা থেকে কোটালীপাড়াগামী স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতি করে।

এ চক্রের গ্রেপ্তার অন্য সদস্যরা হলেন মো. হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা (৩৯), আরিফ প্রামাণিক ওরফে আরিফ হোসেন (৩৩), মো. নুর ইসলাম (৫৩), মো. রাজু শেখ, মো. রেজাউল সরকার (৪৯), মো. রতন (৩৬), মো. শরিফুল ইসলাম (৩৯), মো. হানিফ (৪২), মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলি, আটটি দেশি অস্ত্র, দূরপাল্লার চারটি বাসটিকিট ও তিনটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

আজ রোববার দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। দলের সদস্য ১২ থেকে ১৫ জন। গ্রেপ্তার ডাকাত সর্দার হীরা ও তাঁর অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা বিভিন্ন বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করে থাকেন। দলটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন জেলা অভিমুখী যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করে আসছিল।

আল মঈন বলেন, ঢাকা রুটের বাস ছাড়াও চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় চক্রের কিছু সদস্য বাসচালকের হাতে ও চালকের সহকারীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। চক্রটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনী ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কণক পরিবহন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সুরভী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সিলেট-রাজশাহী মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও রইস পরিবহন, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস ও সরকার ট্রাভেলস, রাজশাহী-বরিশাল মহাসড়কে সেবা গ্রীন লাইন পরিবহন ও তুহিন পরিবহনের বাসে ডাকাতি করেছে।

ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে এ র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতির জন্য চক্রের সদস্যরা ঢাকা থেকে বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তজেলা বাসকে নিশানা করেন। পরে চক্রের কয়েকজন আগেই নির্দিষ্ট বাসের কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে যাত্রী সেজে বাসে ওঠেন। অন্য সদস্যরা যাত্রাপথের পরবর্তী বিভিন্ন কাউন্টার থেকে বাসে ওঠেন।

একপর্যায়ে তাঁরা নির্জন এলাকায় গিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতি শুরু করেন। ডাকাতিকালে বাসে ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তাঁরা।

সাধারণত চক্রটির সদস্যরা মহাসড়কের নির্জন এলাকা ডাকাতির জন্য বেছে নেন। ডাকাতি শেষে তাঁরা ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ফিরে আসেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাঁরা বাড়িঘরে ডাকাতি করতেন বলে জানা গেছে।

ডাকাত দলের গ্রেপ্তার সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‍্যাব বলেছে, ডাকাত সর্দার হীরা আগে গার্মেন্টসপণ্য বিক্রি করতেন। পরে ডাকাতিতে জড়ান। ১০–১২ বছর ধরে ডাকাতি করছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র আইনসহ সাতটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া চক্রের প্রত্যেক সদস্যই বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে দুই থেকে ছয় বছর কারাভোগ করেছেন।