ধর্ষণ করা তরুণীকে আবার খুঁজতে আসে বখাটে, না পেয়ে বাবাকে মারধর

নারী নির্যাতন
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় একবার আটকে রেখে ধর্ষণ করা তরুণীকে (২৭) আবার বাড়িতে খুঁজতে এসে না পেয়ে বখাটেরা তাঁর বাবাকে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাতের এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে জগন্নাথপুর থানা-পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। ৬৫ বছর বয়সী বাবা তাঁর ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আটক চারজন হলেন লিটন মিয়া (৩০), আকাই মিয়া (২৭), আলম মিয়া (২৮) ও দিলাক মিয়া (২৫)। তবে প্রধান অভিযুক্ত শামীম মিয়াকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাত বছর আগে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর দাম্পত্য বিরোধ দেখা দিলে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বাবার বাড়িতে চলে যান। বখাটে শামীম মিয়া ওই তরুণীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। এক মাস আগে শামীম তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। কিছুদিন আটক রেখে তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে মেয়েটি অভিযোগ করেন। শামীমের হাত থেকে বাঁচতে মেয়েটি নবীগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে চলে যান। সোমবার রাত ১২টার দিকে বখাটে শামীম তাঁর লোকজনকে নিয়ে মেয়েটির বাবার বাড়িতে যান। মেয়েকে না পেয়ে বৃদ্ধ বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই অভিযানে নেমে চারজনকে আটক করে।

মেয়েটির বাবার অভিযোগ, শামীমের অত্যাচারে মেয়েকে নিয়ে তিনি অনেক দিন ধরে বেকায়দায় আছেন। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনারও বিচার পাননি তিনি। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটি এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়ে। মেয়েকে না পেয়ে শামীম ও তাঁর লোকজন আমাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান বলেন, ‘শামীম এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় চুরি ও মাদকের মামলা আছে। মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করা ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি।’
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মুসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করেছি। মূল অভিযুক্ত শামীমকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’