ধর্ষণের রাতের ঘটনার বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী তরুণী

প্রথম সারিতে বাঁ থেকে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ও শাহ মাহবুবুর রহমান দ্বিতীয় সারিতে বাঁ থেকে অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান
সংগৃহীত

স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের শিকার তরুণী (২০) তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। রোববার বেলা দেড়টার দিকে সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে উপস্থিত হয়ে তিনি ২২ ধারায় ঘটনার জবানবন্দি দেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে তাঁর জবানবন্দি দেওয়া শেষ হয়।
এ সময় ওই তরুণীর সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য ও তাঁর স্বামী উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী।

গত শুক্রবার রাত পৌনে আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে ধর্ষণের এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মোট নয়জনের বিরুদ্ধে ওই তরুণীর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় যে ছয়জনের নাম উল্লেখ করেছেন, তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। এই ছয়জন হলেন সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)। এর মধ্যে প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করকে রোববার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুরকে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে এবং অর্জুনকে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

ঘটনার শুরু সিলেটের ১২৮ বছরের পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের ফটকের সামনে থেকে। ফটকটি সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশেই। ফটকের ভেতরের মাঠে অনেকে বেড়াতে যান। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতিও সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে স্বামী গিয়েছিলেন সিগারেট কিনতে। ফিরে এসে দেখেন, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করছেন কয়েকজন তরুণ। স্বামী প্রতিবাদ করলে মারধর করে তাঁদের দুজনকে গাড়িসহ জোর করে তুলে নিয়ে যান ওই তরুণেরা। এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে একেবারে শেষ প্রান্তে নেওয়ার পর স্বামীকে একটা স্থানে আটকে রাখেন তাঁরা। তরুণীকে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা এলাকা ত্যাগ করেন। তরুণীর স্বামীর বরাত দিয়ে পুলিশ সাংবাদিকদের এ ঘটনা জানায়।

আরও পড়ুন

এমসি কলেজ সূত্র জানায়, সাইফুর, রনি ও মাহফুজুর ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের অনিয়মিত শিক্ষার্থী। অর্জুন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তারেক ও রবিউল বহিরাগত।

আরও পড়ুন

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে তরুণী ধর্ষণের ঘটনা ছাত্রাবাসের যে কক্ষটির সামনে ঘটেছিল, সেটি ‘ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষ’ হিসেবে পরিচিত। করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রাবাসটিতে অবস্থান করছিলেন ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা। পরে শনিবার পুলিশ ওই কক্ষে অভিযান চালিয়ে একটি পাইপগান, চারটি রামদা ও দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করে। ওই কক্ষে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুর থাকতেন। তাঁকে একমাত্র আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন