নওগাঁয় ক্লিনিক থেকে নারী কর্মচারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ঝুলন্ত লাশ
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার ইসলামিয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আরিফা জান্নাত (২০) নামের এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই তরুণী ক্লিনিকটিতে রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করতেন।

আজ বুধবার সকালে পুলিশ ক্লিনিকের একটি কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। নিহত তরুণীর বাড়ি ধামইরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহিশ্বর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মিজানুর রহমান।

পুলিশ ও রোগীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে এক বছর ধরে আরিফা জান্নাত চাকরি করেন। ক্লিনিকের পরিচালকের নাম নাজিম উদ্দিন ওরফে বাবু। আরিফা ওই ক্লিনিক ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে থাকতেন। ওই ভবনে ক্লিনিকটির নার্স ও অন্য নারী কর্মচারীরাও বাস করতেন। আজ সকালে সহকর্মীরা জানালা দিয়ে তাঁর লাশ ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, ওই ক্লিনিকে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক, নার্স ও রোগী নেই। ১০ শয্যার ক্লিনিকটির সব বেড ফাঁকা। আশপাশের লোকজনের ভাষ্য, লাশ উদ্ধারের খবর শোনার পর ক্লিনিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই পালিয়ে গেছেন। ভর্তি হওয়া রোগীরাও ক্লিনিক ছেড়ে চলে যান।

মারা যাওয়া তরুণীর বাবা মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মেয়ে আরিফার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। তখন মেয়ে তাঁর কোনো সমস্যার কথা বলেনি। তাঁর আচরণ স্বাভাবিক ছিল। আজ সকালে ওই ক্লিনিকের এক নার্স ফোন করে আরিফার মৃত্যুর খবর জানান। তিনি দাবি করেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ধারণা কেউ নির্যাতন করে তাঁকে হত্যা করার পর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুল আলম শাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালের ওই নারী কর্মচারী আত্মহত্যা করেছেন। কারণ, লাশ উদ্ধারের সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে শক্তভাবে লাগানো ছিল। দরজা লাগানো অবস্থায় ঘরের ভেতর থেকে বের হওয়ার অন্য কোনো পথ নেই। ময়নাতদন্তের জন্য ওই তরুণীর লাশ নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন কি না। পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পাওয়া গেলে একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে।