নারায়ণগঞ্জে শ্বশুরবাড়ির কাছে পড়ে ছিল নারী পোশাককর্মীর লাশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় শিল্পী আক্তার (২৬) নামের এক পোশাককর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ১১ টার দিকে শিল্পী আক্তারের শ্বশুরবাড়ি সত্যভান্দী এলাকার ভূঁইয়া বাড়ির পেছনের একটি শৌচাগারের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখেছে।

শিল্পী আক্তার সত্যভান্দী এলাকার মৃত সুমন মিয়ার স্ত্রী। দুই বছর আগে তাঁর স্বামীও হত্যার শিকার হন। স্বামীর মৃত্যুর কারণে কর্মস্থল থেকে পাওয়া ক্ষতিপূরণের ১০ লাখ টাকা নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শিল্পীকে নির্যাতন করতেন বলে দাবি করেছে শিল্পীর পরিবারের লোকজন। তাঁর দুই শিশুসন্তানকেও তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

 শিল্পীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিল্পী আক্তার দুই সন্তানের মা। তাঁর ছেলের বয়স ছয় বছর, আর মেয়ের বয়স চার বছর। দুই বছর আগে তাঁর স্বামী সুমন মিয়াকে কর্মস্থলে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। পরে শিল্পী সোনারগাঁয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

শিল্পীর মা সানোয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে স্বামীর কারখানা থেকে পাওয়া ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়নি। সেটা শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেখে দেন। এ নিয়ে কলহ থেকে তাঁর মেয়েকে প্রায়ই মারধর করতেন শাশুড়ি, ননাশ ও দেবর। এ কারণে তাঁরা মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন শিল্পীর হাতে মাত্র দেড় লাখ টাকা দেন এবং তাঁর দুই শিশুসন্তানকে রেখে দেন। সন্তানদের দেখার জন্য প্রায়ই ওই বাড়িতে যেতেন শিল্পী।

শিল্পীর মা বলেন, অনেক নিষেধ করার পর সন্তানদের টানে ছুটে যেতেন তাঁর মেয়ে। কালও গিয়েছিলেন। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাঁদের ফোন করে জানায়, শিল্পীর লাশ শ্বশুরবাড়ির কাছে একটি বাড়ির পেছন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) শওকত হোসেন। প্রথম আলেকে তিনি বলেন, ওই নারীর গলায় আঙুলের ছাপ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গতকাল রাতের কোনো এক সময় গলায় ওড়না বা অন্য কোনো কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।