পদ্মায় রাতে ইলিশ শিকার

Untitled-1
Untitled-1

পাবনার সুজানগর ও বেড়া উপজেলার পদ্মা নদীতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ইলিশ নিধন চলছে। রাতভর ইলিশ শিকারের পর ভোরে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের বাজারে। 

 ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। 

এদিকে পদ্মায় ইলিশ ধরা বন্ধে পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ অভিযান অব্যাহত রেখেছে । অভিযানে এ পর্যন্ত ২১ জন মৎস্য শিকারিকে কারাদণ্ড ও নদী থেকে ২৫ হাজার মিটার ইলিশ ধরার জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। 

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে ইলিশের বংশ রক্ষা ও বিস্তারে সুযোগ সৃষ্টি করতে ২২ দিন ইলিশ ধরা, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময়ে কেউ এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। 

সুজানগর ও বেড়া উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে ডিম ছাড়তে ইলিশ মিঠাপানিতে আসে। এ সুযোগে অসাধু কিছু জেলে ইলিশ ধরতে নেমে পড়েন। স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে এই কাজে যুক্ত হন কিছু মৌসুমি ইলিশ শিকারি। তাঁরা রাতে নদী থেকে মাছ ধরে ভোর হওয়ার আগেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। এবারও ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরুর রাত থেকেই নদীতে ইলিশ নিধন শুরু হয়েছে। 

স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, রায়পুর, শ্যামনগর ও সাগরকান্দি এবং বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়নের রাজধরদিয়া এলাকায় পদ্মা-যমুনার মোহনা, কাজিশরিফপুর, ঢালারচর ইউনিয়নের কাশেমের ঢাল ও রাজবাড়ী জেলার রাখালগাছি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ নিধন হচ্ছে। রাত গভীর হলে নৌকা নিয়ে জেলেরা নদীতে নামছেন। আবার ভোর হওয়ার আগেই ফিরে এসে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ইলিশগুলো বিক্রি করছেন। এ সময় দাম কম হওয়ায় ইলিশ কেনার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভোর থেকে পদ্মার পাড়ে অপেক্ষা করেন। 

বেড়া উপজেলার কাজিরহাট আমদানি–রপ্তানি ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, দিনে অভিযান থাকলেও গভীর রাতে অভিযান হচ্ছে না। ফলে শিকারিরা এই সময়টা ইলিশ ধরার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। শিকারির জালে ধরা পড়া প্রতিটি ইলিশের পেটেই ডিম থাকে। ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।

 সুজানগর উপজেলার পদ্মার পাড়ের রাইপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, নদীতে পুলিশ টহল দিচ্ছে। এরপরও গ্রামে গ্রামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। 

এ প্রসঙ্গে সুজানগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু তারপরও দুই–একটি জায়গায় ইলিশ নিধনের খবর গেছে। তা বন্ধে কাজ চলছে। 

পাবনার সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) ফরহাদ হোসেন বলেন, দিনে ও রাতে নদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানা-পুলিশ ১৮ জন ও সুজানগর থানা-পুলিশ ৩ জন ইলিশ শিকারিকে আটক করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের ২০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রায় ২৫ হাজার মিটার জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে।