সম্পর্কে জড়িয়ে ৩ সন্তানকে বিষ দেওয়ার কথা স্বীকার মায়ের

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

পরিকল্পনা ছিল তিন সন্তানকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার পর প্রেমিকের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করবেন ফাহিমা খাতুন (৩৫)। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিন শিশুসন্তানকে খাওয়ান তিনি। এতে দুই সন্তান বেঁচে যায়, তবে এক সন্তানকে বাঁচানো যায়নি। ফাহিমা গতকাল মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম গতকাল রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। তাঁর ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ইজিবাইকচালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ফাহিমা খাতুনের সঙ্গে আক্তার মিয়া নামের একজনের পরকীয়া চলছিল। একপর্যায়ে তাঁরা ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ফাহিমার তিন সন্তান। ফাহিমার পরিকল্পনা ছিল তিন সন্তানকে হত্যার পর স্বামীকে তালাক দিয়ে আক্তার মিয়ার সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করবেন।

এ ঘটনায় ফাহিমার স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্ত্রী ও আক্তার মিয়ার বিরুদ্ধে এক সন্তানকে হত্যা ও দুই সন্তানকে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফাহিমা খাতুন গত ১৮ নভেম্বর আক্তার মিয়ার উপস্থিতিতে তিন সন্তানকে উঠান থেকে ডেকে এনে জুস খাওয়ান। বিষক্রিয়ায় তিন শিশু ছটফট করতে থাকে। পরে এলাকাবাসী তিন শিশুকে প্রথমে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে নেয়। এ সময় সাত বছরের মেয়ে সাথী আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ফাহিমার অপর দুই সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম ও রবিউল ইসলামকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর দুই শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে। তখন ফাহিমা ও আক্তার মিয়ার পরকীয়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

এ ঘটনায় ফাহিমার স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্ত্রী ও আক্তার মিয়ার বিরুদ্ধে এক সন্তানকে হত্যা ও দুই সন্তানকে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। এই মামলায় পুলিশ গত সোমবার ফাহিমাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার রাতে ফাহিমা খাতুন হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে অপর অভিযুক্ত আক্তার মিয়া পলাতক।