পরিকল্পনামন্ত্রীর মোবাইলের সর্বশেষ ক্রেতাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ

আইফোন এক্স মডেলের এমন একটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল পরিকল্পনামন্ত্রীর হাত থেকে ।
ছবি: রয়টার্স

ঢাকার সড়কে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মুঠোফোনটি চার দফায় চারজনের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। সর্বশেষ মুঠোফোনটি বিক্রি করা হয় ৩০ হাজার টাকায়। প্রথম তিন দফায় বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা গেলেও সর্বশেষ ক্রেতাকে গ্রেপ্তার কিংবা ছিনতাই হওয়া মুঠোফোনটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৩০ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে রাজধানীর বিজয় সরণির ট্রাফিক সিগন্যালের যানজটে আটকা পড়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে বহনকারী গাড়িটি। তখন গাড়ির গ্লাস খুলে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন মন্ত্রী। এ সময় হঠাৎ এক ছিনতাইকারী ছোঁ মেরে মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনার পরপরই পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন।

বুধবার রাতে মুঠোফোনটি উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার আ স ম মাহতাবউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রীর কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনতাই করা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ফোনটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন একজনের কাছে। এরপর তার হাত ঘুরে সেটি বিক্রি হয় হাতিরপুলের একটি দোকানে। সেই দোকানের মালিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দোকান থেকে ‘আইফোন-এক্স’ মডেলের মুঠোফোনটি আরেকজনের কাছে বিক্রি করা হয় ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। ছিনতাইকারী, দোকানিসহ মুঠোফোনটি প্রথম যে তিনজনের হাতে গেছে, তাঁরা সবাই এখন কারাগারে আছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মাহতাবউদ্দিন বলেন, মন্ত্রীর মুঠোফোনটি দোকান থেকে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছে, তার বিষয়ে কোনো তথ্য ওই দোকানির কাছে নেই। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ কিছু খবর প্রকাশ হওয়ায় সর্বশেষ ক্রেতা হয়তো জেনে গেছেন, এটা মন্ত্রীর ফোন। তাই তিনি মুঠোফোনটি আর খুলছেন না। আর সেই কারণে মুঠোফোনটি এখনো পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

ঘটনার পর পরিকল্পনামন্ত্রীর মুঠোফোন উদ্ধারে থানা–পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র‌্যাব ও পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) কাজ শুরু করে। তারপর ৩৮ দিনেও পরিকল্পনামন্ত্রীর মুঠোফোনটি উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মুঠোফোন ছিনতাই প্রসঙ্গে গত ২ জুন পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমার ফোনটি চুরি হয়েছে। গাড়িতে বসে কথা বলছিলাম, ছিনতাইকারী ফোনটি নিয়ে গেছে। গানম্যান চেষ্টা করেও ধরতে পারেনি।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদুল আলম জানান, তাঁরা মুঠোফোন উদ্ধারে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে মুঠোফোনটি ছিনতাই হওয়ার পর কীভাবে কার কাছে গেছে, তা জানতে পেরেছেন। এখন মন্ত্রীর মুঠোফোনটি উদ্ধারে চেষ্টা করছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রীর মুঠোফোন ছিনতাই মামলার তদন্ত করতে নেমে পুলিশের মিরপুর বিভাগ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে ৫০টির বেশি মুঠোফোন উদ্ধার করেছে।

এ বিষয়ে উপকমিশনার মাহতাবউদ্দিন বলেন, উদ্ধার হওয়া মুঠোফোনের মধ্যে ছয়টি অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোন প্রকৃত মালিকদের দেওয়া হয়েছে। বাকি মুঠোফোনগুলো থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সেখানে রেখে দেওয়া হয়েছে। এসব মুঠোফোনের প্রকৃত মালিক পাওয়া গেলে তাদের দেওয়া হবে।