পাখি শিকারি চেয়ারম্যানের গুলিতে কৃষিশ্রমিক আহত

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় পাখি শিকারি কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের গুলিতে কৃষিশ্রমিক দুলাল চন্দ্র রায় (২৫) আহত হয়েছেন। উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের তালুক গোলনা গ্রামের দলবাড়ির বিলে গত শনিবার দুপুরে পাখি শিকারের সময় এ ঘটনা ঘটে।

দুলাল রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাবের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বন্দুকসহ লাইসেন্স, ৮৮টি কার্তুজ জব্দ করেছে পুলিশ। সোহরাব উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকও।

সরেজমিনে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোনালা বন্দুক নিয়ে এক সঙ্গীসহ মোটরসাইকেলে করে গত শনিবার দুপুরে ওই বিলে পাখি শিকারে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব। তিনি বিলের দক্ষিণ প্রান্তে প্রথমে একটি গুলি ছুড়ে পাখি শিকার করেন। পরে বিলের উত্তর প্রান্তে পাখি শিকারে দ্বিতীয় গুলিটি ছুড়লে সেটি ধানখেতে কর্মরত কৃষিশ্রমিক দুলালের বাঁ চোখে লাগে। এ সময় দুলাল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর তোপের মুখে ফোন করে জলঢাকা থেকে মাইক্রোবাস এনে চিকিৎসার কথা বলে তাঁকে (দুলাল) তুলে নিয়ে যান। পরে পরিবারসহ এলাকার লোকজন জানতে পারেন, দুলালকে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

তালুক গোলনা গ্রামের ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাহেব প্রায় সময়ই এখানে পাখি শিকারে আসেন। এলেই আমার ছেলে মশরেকুল ইসলামকে (১৪) সঙ্গে নেন। শনিবার এসে এলাকার একটি বাড়িতে মোটরসাইকেল রেখে ওই বিলে পাখি শিকারে যান। এরপর শুনতে পাই, পাখি শিকারের জন্য ছোড়া গুলি দুলালের চোখে লেগেছে।’

ঘটনার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাবের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন বলেন, দুলালের কোনো গুলি লাগেনি। তিনি আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়েছেন।

জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত দুলাল চন্দ্র রায়ের পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি। দুলাল বর্তমানে রংপুরের একটি চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর ওই এলাকা থেকে চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে তাঁর (চেয়ারম্যান) রাজধানীপাড়ার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শোবার ঘর থেকে পাখি শিকারে ব্যবহৃত একটি দোনালা বন্দুক, ৮৮টি কার্তুজ ও বন্দুকের লাইসেন্স জব্দ করা হয়।