প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার যুবক সাগর মিজি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড টোল প্লাজা এলাকা থেকে শনিবার সকালে সাগর মিজি (২৩) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। কক্সবাজারে এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার যুবক সাগর মিজি। তিনি পেশায় একজন ঝালাইমিস্ত্রি। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও ভার্চ্যুয়াল জগতে তিনি স্নাতকোত্তর পাস হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডিও রয়েছে তাঁর। এসব আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন বয়সী নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সর্বশেষ চট্টগ্রামের এক নারীর সঙ্গে একই কৌশলে সম্পর্ক গড়ে কক্সবাজারে নিয়ে আসেন তিনি। ২০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের একটি রিসোর্টে ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পালিয়ে যান সাগর।

র‌্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলী এলাকার একটি রিসোর্টে কক্ষ ভাড়া নেন সাগর মিজি। তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান, ২০ সেপ্টেম্বর তাঁর স্ত্রী ঢাকা থেকে আসবেন। তখন দুজন থাকতে পারবেন, এমন একটি কক্ষ ভাড়া নেবেন। ২০ সেপ্টেম্বর সাগর স্ত্রী পরিচয় দিয়ে এক নারীকে নিয়ে হোটেলে অবস্থান করেন। পরদিন সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ ওই কক্ষে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে নারীর লাশ দেখতে পায়। পুলিশে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে।

র‌্যাব জানায়, ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে র‌্যাব প্রযুক্তির সাহায্যে সাগর মিজিকে শনাক্ত করে। হোটেলে দেওয়া মুঠোফোন নম্বর এবং অন্যান্য সূত্রের মাধ্যমে সাগর মিজিকে গ্রেপ্তারের পরই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হয়েছে। তাঁকে কক্সবাজার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।

মাহ্ফুজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাগর জানিয়েছেন, রিসোর্টের কক্ষে ওই নারীকে তিনি ধর্ষণ করেন। এ সময় ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁর। একপর্যায়ে ওই নারীর গলা চেপে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিলে মেঝেতে পড়ে যান। তখন ওই নারীর গলা টিপে ধরে পাশে থাকা গ্লাস দিয়ে কয়েকবার মাথায় সজোরে আঘাত করে হত্যা করেন।

মাহ্ফুজুর রহমান আরও জানান, এরই মধ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পাঁচজন নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছেন সাগর। আরও ১০-১২ জন নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার ফাঁদে পা দেওয়া নারীদের মধ্যে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীও রয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।