বরকত-রুবেলের সহযোগী দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠালেন আদালত

আদালত
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও  ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির মানি লন্ডারিং মামলায় সদরের দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ জজ ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন। আদেশের পর তাঁদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই দুজন হলেন ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও সদর যুবলীগের সদস্য শহীদুল ইসলাম মজনু (৪৭) এবং সদরের কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফকির বেলায়েত হোসেন (৪৬)।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) করা দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা হয় ঢাকার কাফরুল থানায়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন বরকত ও রুবেল। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শহীদুল ইসলাম ও ফকির বেলায়েতের নাম আসে আশ্রয়–প্রশ্রয়দাতা ও তাঁদের সহযোগী হিসেবে।

এই খবর জানার পর ওই দুই ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপন করেন। পরে তাঁরা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হাইকোর্ট তাঁদের নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। জামিন শেষে তাঁরা ঢাকার মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত আজ ১৯ জানুয়ারি জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।

মানি লন্ডারিং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম বিশ্বাস বলেন, আজ বরকত-রুবেলের সহযোগী ওই দুই ইউপি চেয়ারম্যানের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী কৌঁসুলি মো. ফরিদ আহমেদ এবং অতিরিক্ত কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন শাহ আলম ও মো. বাহার। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে শহীদুল ও বেলায়েতকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৬ জুন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে ঢাকার কাফরুল থানায় ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের অভিযোগে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এ ছাড়া মাদক কারবারি ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তাঁরা।

গত ৭ জুন রাতে ফরিদপুরে বদরপুর এলাকা থেকে বরকত ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে হামলা মামলার আসামি হিসেবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর তাঁদের নামে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হয়।

এ মামলায় পরবর্তী সময়ে একে একে গ্রেপ্তার হন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল হাসান, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিমান মাহমুদ শামীমসহ আরও ১০ জন। সবশেষ শহীদুল ও বেলায়েতকে নিয়ে এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

মানি লন্ডারিং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তম বিশ্বাস বলেন, শহীদুল ও বেলায়েতকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।