বাঁচানো গেল না গৃহবধূ দীপিকাকে

দীপিকা আচার্য্য মনিকা
দীপিকা আচার্য্য মনিকা

বাঁচানো গেল না চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ দীপিকা আচার্য্য মনিকাকে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে মারা গেছেন তিনি। মনিকার নিকটাত্মীয় নয়ন আচার্য্য দীপিকার মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শরীরের ৯০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে যাওয়ায় দীপিকাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেছিলেন তাঁর বড় ভাই অরবিন্দ আচার্য্য। এর আগে দীপিকাকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তাঁর স্বামী, ভাশুর ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ থানায় চারজনকে আসামি করে অভিযোগ করেছিলেন অরবিন্দ।

হাজীগঞ্জ থানার মামলার সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলা রোডের বাসিন্দা বিপুল আচার্য্য ও তাঁর বড় ভাই সজল আচার্য্য গত ৩০ এপ্রিল গভীর রাতে দীপিকা আচার্য্যকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টিকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে রাতেই মনিকাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ওই দিনই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটি ভর্তি করা হয়। মনিকার শরীরের ৯৯ শতাংশই পুড়ে গেছে বলে জানান দীপিকার বড় ভাই অরবিন্দ আচার্য্য।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিপুল মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে তাঁদের পরিবারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপুলের এক বন্ধু জানান, বিপুল ছিল মারাত্মক মাদকাসক্ত। সে ঘরে বসেই ইয়াবা সেবন করত। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রায় বিবাদ লাগত।

মনিকার বড় ভাই প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিপুল আমার বোনকে শরীরে আগুন লাগানোর পূর্বে তাকে মেরে ফেলার জন্য মারধর করেছে। তার মাথা ও কপাল ফাটিয়ে আহত করে। পরে বিপুল, সজল, তাদের মা সন্ধ্যা রানী, সজলের স্ত্রী দীপা আচার্য্য মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।’

হাজীগঞ্জ থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, দীপিকার বক্তব্য নেওয়ার পর বিপুলের বড় ভাই সজলকে হাজীগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে। বিপুল ও তাঁর মা সন্ধ্যা রানী আচার্য্যকে ঢাকা মেডিকেল থেকে আটক করে রাতে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসা হয়েছে। অপর আসামি সজলের স্ত্রী দীপা আচার্য্যকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান, এ ঘটনায় তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন।