বাংলাদেশে ইয়াবা উদ্ধার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে

ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি
ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি

বাংলাদেশে ইয়াবা উদ্ধার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (আইএনসিবি)। আইএনসিবির ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফেনসিডিলের মতো কফ সিরাপের নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহারকে শঙ্কাজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) হিসাব উল্লেখ করে বলা হয়, ২০১৭ সালে বিশ্বের ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ মেথাএম্ফিটামিন বা ইয়াবাজাতীয় নেশাদ্রব্য গ্রহণ করেছেন। এটা বাড়ছেই। বিশেষ করে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকায় এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশেষ করে বাংলাদেশে ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে উদ্ধার হয়েছিল ৪ কোটি বড়ি, পরের বছরই ইয়াবা উদ্ধার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি একটি গোপন কারখানা থেকে দেশটিতে প্রথমবারের মতো ক্রিস্টালাইন মেথাএম্ফিটামিন এবং এমডিএমএ উদ্ধার করে। ইয়াবা ঠেকাতে বাংলাদেশে ২০০ গ্রামের বেশি মেথাএম্ফিটামিন পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এখন কম বিশুদ্ধ ইয়াবার বদলে বেশি শক্তিশালী ক্রিস্টালাইন মেথাএম্ফিটামিনের ব্যবহার বাড়ছে। আরও চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত আফগানিস্তান। দেশটিতে এখন ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে আফগানিস্তান থেকে পাচার হওয়া ৬৫০ কেজি ইয়াবার চালান বিভিন্ন জায়গায় জব্দ হয়েছে।

অনেক বছর ধরেই বেশ কিছু দেশে কফ সিরাপ সেবন করে নেশাসক্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বিশেষ করে কোডেইন মিশ্রিত সিরাপের নেশাদ্রব্য হিসেবে অপব্যবহারের কারণে বাংলাদেশ, ভারত, হংকং, চীন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র এটিকে মাদকের তালিকায় ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে ‘বেগুনি পানীয়’ তৈরির ভিডিওগুলো নেশাদ্রব্য হিসেবে কফ সিরাপের ব্যবহার বাড়িয়েছে। ওই ভিডিওগুলোতে দেখানো হয়, কী করে কফ সিরাপের সঙ্গে মদ বা কোমল পানীয় মিশিয়ে নেশাদ্রব্য তৈরি করা যায়। এ ধরনের পানীয় অন্য অঞ্চলগুলোতেও ছড়িয়েছে। নাইজেরিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকায় নেশাদ্রব্য হিসেবে কপ সিরাপের ব্যবহার মহামারি আকারে ছড়িয়েছে বলে বলা হচ্ছে। থাইল্যান্ডে এখন বিশেষ ধরনের ককটেল তৈরিতে কফ সিরাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কোডেইনে তৈরি সিরাপ ফেনসিডিলের ব্যাপক অপব্যবহার হয়। তবে ২০১৮-তে আগের বছরের চেয়ে ফেনসিডিলের উদ্ধার কিছু কমেছে, ওই বছর উদ্ধার হয় ৭ লাখ ১৫ হাজার বোতল ফেনসিডিল, যা আগের বছরের চেয়ে ৫ হাজার বোতল কম।