বাজারে গুলি ছুড়ে অপহরণ, ১০ জনের মুক্তি

রাঙামাটি
রাঙামাটি

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার এক বাজারে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ১৫ জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ১০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আজ শনিবার সকালে উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতিকে (এমএন লারমা) দায়ী করেছে স্থানীয়রা। তবে সংগঠনটি তা অস্বীকার করেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রামপ্রধান ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ করেঙ্গাতলী বাজারে হাটের দিন ছিল। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাজার জমে উঠতেই আট থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী প্রবেশ করে। তারা বাজারে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যে ১০ থেকে ১৫টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এ সময় বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন গ্রামে থেকে আসা অন্তত ১৫ ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে নেওয়ার পথে ও বিকেলে ১০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, পূর্ণ সাধন চাকমা (৪০), তপন চাকমা (২৮), মংগে চাকমা, কান্দারা চাকমা, সচারুময় চাকমা, শান্তি কুমার চাকমা, প্রিয়ময় চাকমা, অমর চার্য চাকমা, ধন কুমার চাকমা ও সুবেশ চাকমা।

গ্রামপ্রধান ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, অহরণকারীদের হাতে এখনো আটক আছেন পাঁচজন। আটক ব্যক্তিরা হলেন, বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বঙ্গলতলী গ্রামের অঙ্গত চাকমা (৪০), একই ইউনিয়নের ডুলুবন্যা গ্রামের সন্তোষ কুমার চাকমা (৪৪), ভালুকমাজ্জ্যা গ্রামের সঞ্চয় চাকমা (২৮) ও মারিশ্যা ইউনিয়নের খেদারছড়া গ্রামের অজয় চাকমা (৪৫) এবং ভূঁইয়োছড়া গ্রামের অরুণ চাকমা। অপহরণকারীরা আজ দুপুরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য স্বজন ও গ্রাম প্রধানদের খবর দিয়েছে। গ্রামপ্রধানরা জানিয়েছেন, তাঁরা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অস্ত্রধারীরা সবাই জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) সশস্ত্র কর্মী। তারা কাচালং নদী পাড় হয়ে বাজারে প্রবেশ করেছিল। এরপর এসব ব্যক্তিদের ধরে নদীর ওপারে রূপকারী গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। করেঙ্গাতলী বাজার কমিটির সভাপতি নিকাশ দে প্রথম আলোকে বলেন, সকালে ঘটনার পর বাজার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বাজারে আসা লোকজন সবাই চলে যায়।

বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানজ্যোতি চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে ১৫ জন সাধারণ মানুষকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে পরে বিভিন্ন সময় ১০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। বঙ্গলতলী ও মারিশ্যা ইউনিয়নের পাঁচ গ্রাম থেকে ৫ জনকে এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তাঁদের স্বজন ও গ্রামের মুরব্বিরা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখা জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) সভাপতি সুরেশ কান্তি চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘করেঙ্গাতলী বাজারে ঘটনা ও অপহরণের বিষয়ে আমাদের দল দায়ী নয়। এমএন লারমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ী করা হচ্ছে। এমএন লারমা গণতান্ত্রিক বিশ্বাসী, এ ধরনের ঘটনার সংশ্লিষ্টতা প্রশ্নেও আসে না।’

বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মঞ্জুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘করেঙ্গাতলী বাজারে দুর্বৃত্তরা ফাঁকাগুলি ছোড়ার ঘটনা শুনেছি। ঘটনার পর বেশ কয়েকজনকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কতজন আটকে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু বলেনি।’