বাবা, ভাই ও নানা মিলে মাদকাসক্ত তরুণকে হত্যা: পুলিশ

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়দিঘুলী এলাকায় মাদকাসক্ত তরুণকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বাবা, ভাই ও নানা মিলে মাদকাসক্ত ওই তরুণকে হত্যা করার কথা আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহত ওই তরুণের নাম আল-আমিন (২৩)। তাঁর বাবার নাম মো. আমিরুল ইসলাম, ভাই মো. আরিফুল ইসলাম (১৮) ও নানা আক্তারুজ্জামান (৪৮)। মো. রুবেল মিয়া (২০) নামের আরও একজন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিহত ওই তরুণের বাড়ি শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার তেজারকান্দি গ্রামে। ১ আগস্ট রাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আল-আমিনকে বাড়ি থেকে এনে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়দিঘুলী এলাকায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে একটি ডোবায় লাশটি ফেলে চলে যান তাঁরা চারজন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে জামালপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আট বছর ধরে আল-আমিন মাদকাসক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে প্রায়ই ঘর থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি ও বিক্রি করতেন। এতে বাধা দিলে মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রায়ই মারধর করতেন আল-আমিন। ছেলের যন্ত্রণায় তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ঈদের দিন (১ আগস্ট) তাঁর মায়ের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না পেয়ে ঈদের দিনও তিনি বাড়িতে অশান্তি করেন। পরে তাঁর বাবা ও ভাই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আল-আমিনকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম মোটরসাইকেলে করে তাঁকে ওই স্থানে নিয়ে আসেন। তারপর তাঁকে প্রথমে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁরা চারজন মিলে হত্যা করেন। পরে হাত-পা বেঁধে তাঁর লাশ পানিতে ফেলে দেন। তারপর যাঁর যাঁর মতো তাঁরা চলে যান।

এসপি দেলোয়ার হোসেন বলেন, অজ্ঞাতনামা হিসেবে ২ আগস্ট একটি ডোবা থেকে ওই তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর ফিঙার প্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ৩ আগস্ট তাঁর বাবা মর্গে এসে ছেলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। পরে তাঁর বাবা নিজে বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদ্‌ঘাটনে পুলিশ মাঠে নামেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার প্রথমে তাঁর ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার পুলিশ তাঁর নানা আক্তারুজ্জামান ও রুবেল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা তিনজনেই বুধবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা এখনো পলাতক রয়েছেন। তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।