বিএনপি ও জামায়াতের ৪৯ নেতা-কর্মীসহ আটক ৮১
সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মাগুরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ৪৯ জন নেতা-কর্মীসহ ৮১ জনকে আটক করেছে। নাশকতার আশঙ্কায় গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়।
সাতক্ষীরায় জামায়াত ও বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মীসহ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, গতকাল বুধবার রাতে যৌথবাহিনীর এই বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১১ জন, কলারোয়া থেকে চারজন, তালা থেকে চারজন, কালীগঞ্জ থেকে তিনজন, আশাশুনি থেকে দুজন, দেবহাটা থেকে একজন, শ্যামনগর থেকে তিনজন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলার জামায়াতের রুকন মোজাফফর হোসেনসহ জামায়াতের ১৪ নেতা-কর্মী, বিএনপির তিনজন কর্মী এবং বিভিন্ন মামলার ২০ জন আসামি রয়েছেন।
মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটজনকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার একটি দল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের ওই দলের এক কর্মকর্তা জানান, আটক ব্যক্তিরা বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গাংনী উপজেলা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
নাশকতার আশঙ্কায় মাগুরা জেলা বিএনপির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রইছ উদ্দিন আহমেদকে (৫০) আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে মাগুরা শহর থেকে আটক করেছে সদর থানার পুলিশ। মাগুরা জেলা সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন রায় বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিএনপি-জামায়াতের ১৪ কর্মীসহ ২৬ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে গোমস্তাপুর উপজেলার ৮ নম্বর আলীনগর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আনারুল ইসলাম (৪৩) রয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। নাশকতার আশঙ্কায় ও বিভিন্ন মামলায় তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
নাটোরে জামায়াতের এক নারী সদস্যসহ বিএনপি ও জামায়াতের নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।
নাটোর সদর থানা সূত্র জানায়, শহরের বলারিপাড়া এলাকা থেকে জেলা জামায়াতের সদস্য শাহানাজ বেগম, হয়বতপুর থেকে জামায়াত কর্মী মোনায়েম হোসেনকে পুলিশ বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নাশকতা চালানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার রাতে বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ জোনাইল ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ, বড়াইগ্রাম পৌরসভার মৌখাড়ার জামায়াত কর্মী আবদুল কুদ্দুস, জোয়াড়ি ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামের জামায়াত কর্মী ইদ্রিস আলী, রোকনউদ্দিন, আবদুল কাদের, আবদুল মান্নান ও সাবেক শিবির নেতা আবদুল হালিমকে আটক করে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হরতালে নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কায় বুধবার রাতে তাঁদেরকে আটক করা হয়েছে।’
{প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা, মাগুরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর এবং কুষ্টিয়া অফিস}