বিএমইটির ইস্যু করা স্মার্ট কার্ডে জালিয়াতির অভিযোগ, বিমানবন্দর ফেরাচ্ছে শ্রমিকদের

পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যাওয়ার কথা ছিল জেসমিনের। মাসখানেক আগে পাসপোর্ট, ভিসা ও বিএমইটির স্মার্ট কার্ড নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক তাঁকে উড়োজাহাজে উঠতে না দিয়ে ফেরত পাঠায়। ডেস্ক জানায়, স্মার্ট কার্ডে থাকা আঙুলের ছাপের সঙ্গে জেসমিনের আঙুলের ছাপ মিলছে না।

জেসমিন একা নন; সম্প্রতি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাই বা সৌদি আরবে যাওয়ার পথে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন অন্তত ১৭ জনের খোঁজ পেয়েছে প্রথম আলো। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, এ সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে । প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) স্মার্ট কার্ড ইস্যু করছে, আর একই মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক শ্রমিকদের ফেরত পাঠিয়েছে জালিয়াতির অভিযোগে।

এ ঘটনায় বনানী থানায় করা মামলায় পাঁচ দালালকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

জনশক্তি ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্তত তিনজন কর্মকর্তা, পুলিশ ও দায়িত্বশীল একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র বলছে, এই জালিয়াতির সঙ্গে বিএমইটির কিছু কর্মী জড়িত। যাঁদের বিদেশযাত্রা নাকচ হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই আঙুলের ছাপ অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছিল। সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয়নি।

এখন প্রশ্ন উঠছে দুটি। প্রথম প্রশ্ন হলো পাসপোর্ট, ছবি, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ জমা দিলেই কেবল বিএমইটি স্মার্ট কার্ড ইস্যু করে থাকে। সে ক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ডে জালিয়াতি হচ্ছে কীভাবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো জাল কার্ড নিয়ে সবাই যে ধরা পড়ছেন তা নয়, কেউ কেউ বিদেশে চলে গেছেন, ফিরেও এসেছেন। সেটা কীভাবে সম্ভব হলো?

দু-একটা ঘটনা ঘটেছে। জালিয়াতির বিষয়টি আগে থেকে ধরা সম্ভব না। তবে এয়ারপোর্টে আমাদের লোকজনই ধরেছে। এসব ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে
বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম
ফাইল ছবি

বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দু-একটা ঘটনা ঘটেছে। জালিয়াতির বিষয়টি আগে থেকে ধরা সম্ভব না। তবে এয়ারপোর্টে আমাদের লোকজনই ধরেছে। এসব ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

জনশক্তি রপ্তানি খাতে ই-গভর্নেন্স চালুর অংশ হিসেবে ২০১০ সালে স্মার্ট কার্ডের প্রচলন করে সরকার। এই কার্ডে পাসপোর্ট–ভিসায় থাকা তথ্য, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিবেদনের পাশাপাশি বিদেশগামী চাকরিপ্রার্থীদের আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক ইমপ্রেশন) রাখা হয়। বিমানবন্দরের অভিবাসন শাখার মেশিনে আঙুলের ছাপ দিলে কর্মীর যাবতীয় তথ্য কম্পিউটার স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। সব ঠিকঠাক থাকলে তবেই কর্মী অভিবাসন ডেস্ক পেরোতে পারেন।

আগে কর্মীদের ঢাকায় এসে আঙুলের ছাপ দিয়ে যেতে হতো। এখন সারা দেশের ৪২টি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডেমো) এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) ছাপ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আঙুলের ছাপ সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে কি না, তা বিএমইটির ওয়েবসাইটে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। সঠিক হলে বিদেশগামী কর্মী ‘সাকসেস’ লেখা দেখতে পাবেন। এবার যাঁরা ফেরত এসেছেন, তাঁদের নামের পাশেও বিএমইটির ওয়েবসাইটে ‘সাকসেস’ কথাটিই দেখা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

কীভাবে স্মার্ট কার্ডে জালিয়াতি হচ্ছে

গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ এই সমস্যার গোড়ায় যেতে চাইছে। বেশ কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন, আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই–বাছাইয়ের কাজ চলছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডেমো বা টিটিসি অফিসে আঙুলের ছাপ দেওয়ার কাজটি তত্ত্বাবধান করেন সহকারী পরিচালক বা উপসহকারী পরিচালকদের অধীন কর্মরত লোকজন। নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট, ভিসা ও অন্য নথিপত্র দেখে বিদেশগামী কর্মীর আঙুলের ছাপ নেওয়ার কথা। সেখানেই ঘটছে জালিয়াতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ঢাকা জেলা ও বিভাগের অন্তর্ভুক্ত তিনটি অফিস এবং উত্তরবঙ্গের একটি জেলায় বিএমইটি কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশে একজনের আঙুলের ছাপ আরেকজন দিচ্ছে বলে তারা খবর পাচ্ছে। বিদেশগামী কর্মীরা নিজেদের নাম নিবন্ধন করার সময় ২০০ টাকা দেন। আঙুলের ছাপ দিতে আলাদা করে কোনো টাকা দিতে হয় না। আর দালালদের দিয়ে ছাপ দেওয়াতে বিদেশগামীদের কয়েক হাজার টাকা দিতে হয়। এসব টাকাই ভাগবাঁটোয়ারা করে নেয় দুই পক্ষ।

একই চক্করে পড়েন কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, বরগুনা, নোয়াখালী, মাগুরা, গোপালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের বিদেশগামী কর্মীরা। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পাসপোর্ট জব্দ করে একটি কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্মার্ট কার্ড জালিয়াতির শিকার বাগেরহাটের জেসমিন বনানী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ নাসরিন বেগম ওরফে তামান্না, মো. আলমগীর হোসেন ওরফে আলম, মো. রিপন, জাহিদ ও উজ্জ্বল নামের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা দালাল হিসেবে কাজ করতেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই পাঁচজন রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল নামের জনশক্তি রপ্তানিকারক একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য সারা দেশ থেকে কর্মী সংগ্রহ করছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, আলওয়াফা স্টার ক্লিনিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিসেস ১০০ জন পুরুষ ও ২০০ জন নারী কর্মী নিয়োগ করবে। কর্মী সরবরাহের কাজ পেয়েছিল রাব্বি।

জিজ্ঞাসাবাদে নাসরিন বেগম ওরফে তামান্না বলেন, আলমগীর তাঁকে (নাসরিনকে) জানান, জেসমিন আঙুলের ছাপ দিতে পারছেন না। তিনি যেন বিকল্প উপায় খুঁজতে শুরু করেন। পরে এক পূর্বপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তিন হাজার টাকা দিলে একজনের আঙুলের ছাপ আরেকজন দিতে পারবেন। টাকা দিয়ে তিনি জেসমিন ও নূরজাহানের আঙুলের ছাপ দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। তিন হাজার টাকা যে ব্যক্তি নিয়েছেন, পুলিশ এখন তাঁকে খুঁজছে।

নোয়াখালীর মোহাম্মদ জাকির হোসেন গত ২২ ফেব্রুয়ারি আবুধাবি যাওয়ার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে তাঁকেও ফেরত পাঠানো হয়। ৭ মার্চ তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আঙুলের ছাপ নিজে না দিলেও বিদেশে যাওয়া যায় বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল।

একই চক্করে পড়েন কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, বরগুনা, নোয়াখালী, মাগুরা, গোপালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের বিদেশগামী কর্মীরা। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পাসপোর্ট জব্দ করে একটি কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই কাগজে বিদেশগামী কর্মীদের আঙুলের ছাপের সঙ্গে স্মার্ট কার্ডে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপের কোনো মিল নেই বলে লেখা হয়েছে। কর্মীদের বিএমইটি সদর দপ্তরে গিয়ে সঠিক ছাড়পত্র নিয়ে বিদেশে যাওয়ার আর অফিস চলাকালে বিএমইটির বহির্গমন ও প্রটোকল পরিচালকের কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে আসতে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

প্রায় একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জেসমিন। তিনিও প্রথম আলোকে বলেন, অভিবাসনের জন্য গেলে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি কার লোক। তখন তিনি বলেন, তিনি তামান্না ম্যাডামের লোক। আঙুলের ছাপ না মেলায় তাঁকে যখন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন চারটি নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেই বিষয়টি মিটে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একজনের আঙুলের ছাপ আরেকজন দিলেও ধরা পড়ার সুযোগ কম প্রক্রিয়াটির ত্রুটির কারণে। বিদেশে যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার আগেই নাম নিবন্ধন করাতে পারেন। যে কেউ আঙুলের ছাপ দিলেও কর্মীর পাসপোর্ট ও নিবন্ধন নম্বর দিয়ে ওয়েবসাইটে ঢুকলে, ‘সাকসেস’ শব্দটি দেখায়।

বিমানবন্দরে ধরা পড়ার পরও ‘সিস্টেমে’ সৌদি আরব গিয়েছিলেন এক নারী

বিমানবন্দরে ধরা পড়ার পরও ‘সিস্টেমে’ সৌদি আরব গিয়েছিলেন এক নারী
গত ৩০ জানুয়ারি সৌদি আরব থেকে এক নারীকে ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁর বোন ৭ মার্চ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর এক দালালের মাধ্যমে তাঁর বোন সৌদি আরবে যান। তাঁকে আঙুলের ছাপ দিতে হয়নি। বিষয়টি বিমানবন্দরে ধরাও পড়েছিল। তবে পরে ‘সিস্টেম’ হয়ে যায়।

কীভাবে মিটমাট হলো, তা জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, তাঁর বোন অভিবাসনের জন্য প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কে পৌঁছানোর পরই জানতে চাওয়া হয় তাঁকে কে পাঠিয়েছে। তাঁরা জানান, তাঁর বোনের আঙুলের ছাপ মিলছে না। এখন যেন ওই দালালকে ফোন করা হয়। তাঁর বোন শুধু একটি বিকাশ নম্বর দিতে শুনেছেন। এরপরই তাঁকে অভিবাসন পার করে দেওয়া হয়।

প্রায় একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জেসমিন। তিনিও প্রথম আলোকে বলেন, অভিবাসনের জন্য গেলে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি কার লোক। তখন তিনি বলেন, তিনি তামান্না ম্যাডামের লোক। আঙুলের ছাপ না মেলায় তাঁকে যখন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন চারটি নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেই বিষয়টি মিটে যাবে। তবে জেসমিন কান্নাকাটি করায় লোক জমে যায়। এ কারণে তাঁকে অভিবাসন পার করিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। জেসমিন মামলার এজাহারেও লিখেছেন এ কথা।

শ্রমিকেরা টাকা ফেরত পাবেন?

নিয়ম অনুযায়ী বিদেশগামী কর্মীদের জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই বিদেশ যেতে হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর্মী খুঁজে দেন দালালেরা। কাগজপত্রে দালালদের কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তাঁরাই বিদেশগামী কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা, ছবি, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও আঙুলের ছাপ নিয়ে সব কাগজপত্রসহ জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দেন। তাঁদের মনোনীত একজন বিএমইটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।

বাড়িত যাইতে পারতাছি না, ঢাকায় আইজ এই বাসায়, কাল ওই বাসায় থাকি। স্বামী মারা গেছে, চাইরটা বাচ্চা, ভাইয়ের ভিটা বন্ধক। আমি কী করমু জানি না
নূরজাহান

নিয়ম অনুযায়ী বিএমইটিকে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। তাতে লেখা থাকে, অনুমোদিত কর্মীরা কোম্পানিতে অবশ্যই চাকরি পাবেন, প্রত্যেক কর্মীকে প্রস্তাবিত বেতন–ভাতা, আবাসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে এবং কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কর্মীর থাকা–খাওয়ার খরচ, প্রত্যাবর্তন ব্যয়সহ কর্তৃপক্ষ যে ক্ষতিপূরণ আরোপ করবে, তা দিতে বাধ্য থাকবে।

তবে বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা একরকম নাকচ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে কর্মী নিজে আঙুলের ছাপ না দিয়ে আমার কর্মীকে অপরাধে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার সহানুভূতি পাওয়ার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। আর আমার লোকজনের বিরুদ্ধে হওয়া উচিত বিভাগীয় মামলা।’

বাগেরহাটের জেসমিন, নেত্রকোনার নূরজাহান কিংবা নোয়াখালীর জাকির—তিনজনকেই দালালেরা বলেছেন, আঙুলের ছাপের ব্যবস্থাও তাঁরাই করবেন। দালালদের কারণে তাঁরা ফেঁসে গেছেন।

নূরজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়িত যাইতে পারতাছি না, ঢাকায় আইজ এই বাসায়, কাল ওই বাসায় থাকি। স্বামী মারা গেছে, চাইরটা বাচ্চা, ভাইয়ের ভিটা বন্ধক। আমি কী করমু জানি না।’